গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের রাব্বি মিয়া (১৬) নামের এক কলেজছাত্রকে অপহরণ করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে গ্রামের মাঠের পুকুর পাহারার সময় তাকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। রাব্বি ষোলটাকা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথমবর্ষের ছাত্র।
রাব্বির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ষোলটাকা-বানিয়াপুকুর গ্রামের মাঠের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমের ভাগ্নেজামাই ঢাকার ব্যবসায়ী নাছিম মিয়ার কয়েকটি পুকুর রয়েছে। পাশেই দাউদ শাহের আশ্রম। পুকুরে রাতে পাহার করে রাব্বি ও দাউদ শাহ। গত বুধবার রাতে দাউদ শাহ ও রাব্বি আশ্রমের পাশের একটি ঘরে শুয়ে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আশ্রমে হানা দিয়ে রাব্বিকে অপহরণ করে। তবে কী কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছে তা জানাতে পারেননি রাব্বির পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম। রাব্বিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। তবে গত রাত বারোটার দিকে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত রাব্বির হদিস মেলেনি। পরিবারের পক্ষ থেকেও থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই রাব্বির পরিবারে বইছে কান্নার রোল। ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা রাব্বির মা রওশন আরা ও পিতা জাহাঙ্গীর আলম। কারো সাথে পুর্ব শত্রুতাও নেই। মুক্তিপণও দাবি করেনি অপহরণ কারীরা। তাহলে কী কারণে এ অপহরণ তা হিসেব করে দিশেহারা রাব্বির পরিবারের সদস্যরা।
ষোলটাকা মাঠের আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা দাউদ শাহ জানান, কাছাকাছি দুটি ঘরে রাব্বি ও তিনি শুয়েছিলো। গভীর রাতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ডাকে তার ঘুম ভাঙে। আগন্তুক তাকে রাস্তা দেখিয়ে দিতে বলেন। রাস্তা ভুলে সে আশ্রম এলাকায় ঢুকে পড়েছে বলে দাবি করে। তাকে পথ দেখিয়ে ফিরে এসে দাউদ শাহ দেখেন রাব্বি ঘরে নেই। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিসহ তার সঙ্গীরা রাব্বিকে অপহরণ করেছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
রাব্বির মা রওশন আরা জানান, দরিদ্রতার মধ্যে তারা রাব্বিকে লেখাপড়া করাচ্ছি। প্রতিটি মুর্হূতে অভাবের সাথে যুদ্ধ করে জীবন চলে। তাই টাকার জন্য তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন না। তবে তাদের জামাই অর্থাৎ পুকুর মালিক নাছিম মিয়ার কাছে চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনা করে রাব্বিকে অপহরণ করা হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাব্বিকে উদ্ধারের দাবিও জানান তিনি।
এদিকে গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাব্বির খোঁজ মেলেনি। তার পিতা-মাতা কিংবা আত্মীয়স্বজনের কাছে অপহরণের বিষয়ে কেউ স্বীকারোক্তিও দেয়নি। তাহলে কী কারণে এ অপহরণ? শুধুই কি অপহরণ নাকি অন্য কোনো বিষয় লুকিয়ে আছে তা নিয়ে পরিবার ও এলাকার মানুষের মধ্যে চলছে নানান আলোচনা। পাশাপাশি ষোলটাকাসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে অপহরণ আতঙ্ক বিরাজ করছে। মৎস্য চাষের ওই এলাকাগুলোর পুকুর পাহারা দিতেও অনেকেই ভয় পাচ্ছেন।