মাঝারি ও অতিক্ষুদ্র শিল্পেও ঋণ দেবে বিসিক

স্টাফ রিপোর্টার: মাঝারি ও অতি ক্ষুদ্র শিল্পেও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিসিকের পৃষ্ঠপোষকতার সুযোগ তৈরি করতে আইন সংশোধনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৪’র খসড়ায় নীতিগত এ অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বা বিসিক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে একটি পৃষ্ঠপোষক কর্তৃপক্ষ হিসাবে কাজ করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এসএমইর সম্ভাবনা উজ্জ্বল হওয়ায় এ খাতেও বিসিকের সহযোগিতার চাহিদা তৈরি হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পাশাপাশি মাঝারি ও মাইক্রো বা অতিক্ষুদ্র শিল্পেও যাতে বিসিক সহায়তা দিতে পারে সে সুযোগ সৃষ্টি করতেই এ আইন সংশোধন করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ সংশোধনীর ফলে বিসিক চাইলে এর আওতাধীন কোনো কোম্পানির ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশন করতে পারবে এবং এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করতে পারবে।

বিসিক এর একটি বোর্ড রয়েছে। এর পাশাপাশি একটি নয় সদস্যর উপদেষ্টা প্যানেল করার বিধান রাখা হয়েছে খসড়ায়। এতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিরা থাকবেন, যাতে কারখানা থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাওয়া যায়। এর চেয়ারম্যান সরকার ঠিক করবে। সচিব জানান, সংশোধনীর মাধ্যমে কিছু অপ্রয়োজনীয় ধারা বাদ দিতে বলা হয়েছে। এ আইনে শেয়ার হোল্ডিঙের বিধান আছে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বিসিক বাণিজ্যক ভিত্তিতে পরিচালনা করার মতো প্রতিষ্ঠান নয়, তাদের শেয়ার হোল্ডিঙের প্রয়োজন নেই, তারা সরকারি সহযোগিতায় চলবে।

মোশাররাফ হোসাইন জানান, বর্তমানে বিসিক এর ব্যবস্থাপনায় ৭৪টি শিল্পনগরীতে ৫ হাজার ৭১৪টি শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মী সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৫৫ হাজার। শিল্পনগরীর বাইরে বিসিকের পৃষ্ঠপোষকতায় ৯ লাখ ৩০ হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেসব কারখানায় প্রায় ৩৬ লাখ ১৪ হাজার লোক কাজ করছে।

জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির (এনএডিপি) পরিচালনায় নতুন একটি আইনের খসড়াও অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এর নাম হবে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমী (এনএডিপি) আইন, ২০১৪। আগে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি ছিলো। পরে ২০০৯ সালে নতুন নাম হয় জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি। এটি ১৯৬১ সালের গভার্নমেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেইনিং ইন্সটিউশন নামে একটি অধ্যাদেশ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানের কাজের পরিধি বাড়ায় এবং বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ইন্সটিটিউশনগুলো আলাদা আইনে পরিচালিত হয় বলে পরিকল্পনা বিভাগ এনএপিডির জন্যও আলাদা আইন প্রস্তাব করেছে বলে জানান সচিব।

এ আইনের প্রধান কয়েকটি দিক হচ্ছে এনএপিডি হবে সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যার ১৫ সদস্যর একটি বোর্ড থাকবে। পরিকল্পনা মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী এর চেয়ারম্যান এবং পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন। এ বোর্ডের আলাদা তহবিল থাকবে এবং সরকারের সার্বিক নির্দেশনায় এর হিসাব পরিচালিত হবে। প্রয়োজনে সরকার এ আইনে বিধি করতে পারবে এবং বোর্ড সরকারের অনুমতি নিয়ে প্রবিধান তৈরি করতে পারবে।

এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হবে প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রকাশনা। প্রথম দিকে কেবল প্রকল্প সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে তা বিস্তৃত হয়েছে। সেগুলোকেই নতুন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।