স্টাফ রিপোর্টার: শীতের আনন্দকে পূর্ণতা দিতে প্রতিবছর যোগ হয় হরেক রকমের সুস্বাদু পিঠাপুলি, ক্ষীর-পায়েস। এসবে মিষ্টির উৎস হয়ে দাঁড়ায় খেজুরের গুড়। পাটালি, নলেন, ঝোলা গুড় কার্তিকের শুরু থেকেই বাজারে বিক্রি শুরু হয়। মান ভেদে দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
খেজুরের গড় কতো দিন ধরে দেখছি আমরা? বিতর্ক থাকলেও প্রভাতরঞ্জন সরকারের শব্দচয়নিকায় লেখা- ‘গুড়’র বয়স অন্তত হাজার দেড়েক বছর। এটি প্রাচীন বৈদিক শব্দ। পাটালি গুড়কে সংস্কৃতে বলে গুড়পট্ট। আবার গুড়চক্রিকা বললেও ভুল হবে না, তবে বড়ই ভুল হবে গুড়কুণ্ডলিকা বললে। কারণ গুড়কুণ্ডলিকা হলো জিলিপি। গুড় বস্তুটি বাঙালির একান্তই আপন আবিষ্কার। গুড় ফরসা করতে কালক্রমে রসের সাথে মিশিঙে ফিটকিরি আর হাইডোজ নামের এক রকমের রাসায়নিক পাউডার মেশানোর কারণে স্বাদ বদলেছে। হ্রাস পেয়েছে গুড়ের গুণ।
চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে বসে খেজুরগুড়ের বিশাল হাট। প্রতি সপ্তায় কয়েক ট্রাক গুড় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে রফতানি হয়। বিদেশেও নেয়া হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়ে বলেছে, এবারও খেজুরগুড়ের চাহিদা গতবারের মতোই।
কী আছে খেজুরের গুড়ে: প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের গুড়ে ৪৮ দশমিক ১ গ্রাম আছে শর্করা, আয়রন ১১ দশমিক ৪ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৬৫ মিলিগ্রাম। এছাড়া আছে উচ্চমাত্রার ফসফরাস। খাদ্যশক্তি ২৪০ ক্যালরি। বারডেম হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের প্রধান কামরুন নাহার জানালেন, উচ্চ শর্করার পাশাপাশি খেজুরের গুড়ে আয়রন ও ক্যালসিয়াম বেশি থাকায় যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাদের জন্য খেজুরের গুড় উপকারী। তাছাড়া চিনিতে কোনো আঁশ থাকে না। খেজুরের গুড়ে আঁশ থাকায় তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। স্বাদ ও গুণের বিচারে খেজুরের গুড় মিষ্টির অন্য দুটি উৎস চিনি বা আখের গুড়ের তুলনায় উন্নত। তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এটি না খাওয়ায় ভালো।