জীবননগর ব্যুরো: জীবননগরে দুপুরে প্রতারক প্রেমিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজাপ্রদানের আদেশ দানের পর রাতে ধুমধামে শামীম-বিপাশার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। সাজাপ্রদানের পর দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত শামীম থানা কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় পুলিশের নিকট বিয়ের কথা বললে রাতে ইউএনও অফিসে বিয়র আয়োজন করা হয়। বর-কনের পরিবার, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুধীদের সরব উপস্থিতিতে শামীম-বিপাশার বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর ইউএনও নুরুল হাফিজ বর-কনেকে উপঢৌকন প্রদান করেন। নববধূ বিপাশাকে নিয়ে রাতেই উপজেলার সদরপাড়া গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন বর শামীম। গতকাল রোববার আলোচিত বিয়ের এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের সদরপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে শামীম হোসেন (২১) দামুড়হুদা উপজেলার সুবোলপুর গ্রামের আয়নাল হকের মেয়ে বিপাশার (১৮) প্রেমসম্পর্ক গড়ে তোলে। বিপাশা শামীমের খালাতো বোনের চাচাতো ননদ। সম্পর্কের একপর্যায়ে সে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার দেহভোগ করে আসছিলো। এক পর্যায়ে প্রেমিকা বিপাশা বিয়ের জন্য চাপ দিলে প্রেমিক শামীম তা অস্বীকার করে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বিপাশার পরিবার অভিযোগ দায়ের করে। ইউএনও নুরুল হাফিজ গতকাল উভয় পরিবারকে তার অফিসে ডেকে পাঠান। ইউএনও’র উপস্থিতিতে দুপুরে শামীম বিপাশাকে বিয়ে করার কথা বললে ইউএনও অফিস বিয়ের সকল আয়েয়াজন সম্পন্ন করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সীমান্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দু নেতার কারণে এ বিয়ে ভেঙে যায়। ফলে ইউএনও নুরুল হাফিজ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রেমিক শামীমকে প্রতারণার মাধ্যমে প্রেমিকা বিপাশার দেহভোগ করার অপরাধে ১ বছরের কারারদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। পুলিশ সাজাপ্রাপ্ত শামীমকে থানা কাস্টডিতে নেন। সাজার ভয়ে থানা কাস্টডিতে থাকা শামীম রাতে পুলিশের নিকট বিপাশাকে বিয়ে করার আকুতি জানিয়ে সাজা থেকে মুক্তি পাওয়ার আবেদন করে।
শামীমের আবেদনের প্রেক্ষিতে এসআই শতদল রাতে শামীমকে ইউএনও’র অফিসের নিয়ে উপস্থিত হলে ইউএনও শামীম-বিপাশার বিয়ের আয়োজন করেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, সীমান্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার ফরহাদুর রেজা, উপজেলা পল্লি জীবিকায়ন অফিসার শামনুর রহমান, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রহমান, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এমআর বাবু, প্রেসক্লাবের সহসম্পাদক জিএ জাহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক সালাউদ্দীন কাজল, কাজী সামসুর রহমান চঞ্চল, সাব্বির আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক ইকতিয়ারউদ্দিন, ছেলে পিতা ফজলুর রহমান ও কনের চাচাসহ বিপুল মানুষের উপস্থিতিতে কাজীর ফরহাদ হোসেন রাজু ও উপজেলা মসজিদের পেশ ইমাম মাও. আব্দুল জলিল ধুমধামের সাথে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ের পর ইউএনও নুরুল হাফিজ বর শামীম ও কনে বিপাশাকে দোয়াসহ তাদের হাতে উপঢৌকন তুলে দিয়ে তাদের দাম্পত্য জীবনের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করেন। শেষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপস্থিত সকলকে মিষ্টি মুখ করানো হয়।