স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার বেসরকারি কলেজগুলোতে ২০১৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল হতাশ করেছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করে বলেছেন, যারা জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে তারা অভিবাদন পাওয়ার দাবিদার হলেও চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজসহ ১০ কলেজের ফলাফল স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ হয়েছে। অথচ এসব কলেজে সরকারিভাবে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকা বেতন ও বোনাস দেয়া হয়ে থাকে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি থানার মধ্যে জীবননগর বাদে তিনটি থানার কলেজগুলোর ফলাফল যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে। তিনটি উপজেলা থেকে ৬ হাজার ৭৩৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। পাস করেছে ৩২৮৯ এবং ফেল করেছে ৩৪৫০ জন। পাসের হার ৪৫ দশমিক ৪১। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়টি কলেজে ২৭২৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৭৮৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৫ জন। পাসের হার ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আলমডাঙ্গা উপজেলার আটটি কলেজে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ২২২৭ এবং পাস করেছে ৮৪২ জন। পাসের হার ২৬ দশমিক ৪৪। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ জন। দামুড়হুদা উপজেলার তিনটি কলেজে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ১৭৮৩ জন এবং পাস করেছে ৬৬১ জন। পাসের হার ৪০ দশমিক ৮০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ জন। জেলায় মোট জিপিএ-৫’র সংখ্যা ১৫১ জন।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ওই ১০টি কলেজের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরে পৌর ডিগ্রি কলেজে ৫২৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র ৯৮ জন পাস করে। যার মধ্যে একজনও জিপিএ-৫ পায়নি। এমনকি জিপিএ-৪ও নেই। আলমডাঙ্গার গোকুলখালীর ডা. আফছার উদ্দীন কলেজ থেকে ১১২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ২৮ জন। এখানেও জিপিএ-৫ নেই। মুন্সিগঞ্জ নিগার সিদ্দিক কলেজ থেকে ২১৪ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৬৪ জন পাস করেছে। হারদী এমএস জোহা কলেজ থেকে ৪১৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১২৫ জন। কোনো জিপিএ-৫ নেই। আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজে ২৯৭ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮০ জন। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে ৮৪৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৪১০ জন। দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা কলেজ থেকে ৩৫৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৩৩ জন। দর্শনা সরকারি কলেজ থেকে ৮৪০ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৩১ জন। দামুড়হুদা ওদুদ শাহ কলেজ থেকে ৫৯০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৯৭ জন এবং চুয়াডাঙ্গা আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ৫৫৯ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৩৮ জন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী বলেন, এইচএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্ন, শিক্ষার্থীদের মান ভালো না, ক্লাস না করা, সব বিষয়ে পাস করলেও ইংরেজি বিষয়ে ৩শ পরীক্ষার্থী ফেল করায় ফল বিপর্যয় ঘটেছে। হুইপ ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কামাল উদ্দিন বলেন, ইংরেজি বিষয়ে ৯০ ভাগ পরীক্ষার্থী ফেল করেছে। ইংরেজির সিলেবাস পরীক্ষার্থীরা ভালোমতো গ্রহণ করতে পারছে না। সে কারণে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ইংরেজি বিষয়ে স্পেশাল ক্লাস নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষক-অভিভাবক ফোরাম চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোত্তালিব জানান, এইচএসসি পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গার ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করছি। পাশাপাশি কারণ অনুসন্ধান করে তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে ওই কমিটিকে।