আলমডাঙ্গার ভুয়া চোখ-কান বিশেষজ্ঞ রফিকুলের ৬ মাস কারাদণ্ড

রায়সা গ্রামে গোয়েন্দা সংস্থার অভিযান : ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: রফিকুল ইসলাম নামের আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুরে বসবাসকারী ভুয়া চোখ ও কান বিশেষজ্ঞকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক মো. আবু জাফর ইকবাল তাকে আটক করে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট নিয়ে গেলে তিনি এ দণ্ডাদেশ দেন।

Chobi Vuya Doctor

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুরে বসবাসকারী ভুয়া চোখ ও কান বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয়দানকারী রফিকুল ইসলামকে গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার উপপরিচালক মো. আবু জাফর ইকবাল তাকে রায়সা থেকে আটক করেন। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার ফিল্ড অফিসার লুতফুল কবীর, কনস্টেবল সজীব ও হৃদয় উপজেলার রায়সা গ্রামের মৃত শুকুর আলী পরমানিকের ছেলে কাতব আলীর বাড়ি থেকে ভুয়া চিকিৎসক রফিকুলকে রোগী দেখার সময় আটক করেন। পরে খাসকররা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই এবি রবিউল ইসলাম তাকে গ্রেফতার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট নিয়ে যান। অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি তিনি রায়সা বাজারপাড়ার কিতাব উদ্দিনের চোখ অপারেশন করেন। গতকাল ওই রোগীকে দেখতে গিয়ে তিনি আটক হন। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন গত ২০ বছর ধরে অসহায় রোগী সাধারণের সাথে তিনি অসংখ্য প্রতারণা করেছেন। তিনি ঢাকা মুন্সিগঞ্জের মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে। কোনো মেডিকেল কলেজ তো দূরের কথা কলেজের চৌকাঠ মাড়াতে পারেননি তিনি। এসএসসি পাস করেছেন। ঢাকার একটা প্রতিষ্ঠানের নামে টিসিওপিএস পাসের ভুয়া সনদ তৈরি করে নেন নিজেই। প্রায় ১৫ বছর পূর্বে তিনি জামজামির মাহতাব মাস্টারের মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে রফিকুল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে চিকিৎসার নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। তিনি প্রতি শুক্রবার জামজামির কৃষি ব্যাংকের নিচে এবং মঙ্গলবারে জেহালার মুন্সিগঞ্জ বাজারের হাজি সুপার মার্কেটে আরাফ চশমা ও ঘড়িঘরে রোগী দেখেন। এছাড়া তিনি গোবিন্দপুরের নিজ বাড়িতে মিনি হাসপাতাল চালান। সেখানে চোখের ছোট-খাটো অপারেশনও করেন। এমনকি মাঝেমধ্যে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে রোগীও দেখেন। এছাড়া ইতঃপূর্বে অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর চোখ নষ্ট করে ফেলায় ৱ্যাবের হাতে আটক হওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার আলমডাঙ্গা থানার এসআই জিয়াউল হক তার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। তার চিকিৎসার সকল সরঞ্জামও জব্দ করা হয়।