সাহেদুজ্জামান টরিকের বক্তব্য মন্ত্রমুগ্ধের মতো শ্রবণ

কষ্ট কখনো কোনো মানুষেরই জীবনে স্থায়ী নয়

 

স্টাফ রিপোর্টার: স্বপ্ন দেখতে হবে বাস্তবমুখি। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এজন্য অন্যের সহযোগিতাও নিতে হবে। আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে সহযোগিতা করার মতো মানুষের অভাব হয় না। সহযোগিতা পেতে হলে অবশ্যই নিজেকে এগিয়ে যেতে হয়।

জীবন সংগ্রামের কাহিনী বলতে গিয়ে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রেসিডেন্ট সাহেদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচারক চুয়াডাঙ্গার কৃতীসন্তান সাহেদুজ্জামান টরিক উপরোক্ত মন্তব্য করে বলেন, ভয় করে কিছুই জয় করা যায় না। জয় করতে হলে সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে সাহসী হতে হই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করার আগেই ঢাকাস্থ চুয়াডাঙ্গা সমিতির জন্য সময় দিয়েছি। সময় দেয়ার মধ্যদিয়ে সাবেক সচিব কাজি রকিব উদ্দীন, জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম এইচআর মালিকসহ বেশ কয়েকজন গুণী মানুষের সানিধ্য পেয়েছি। তাদের নিকট থেকে শিখেছি সাফল্য পেতে হলে কীভাবে কোথায় কথা বলতে হয়। আচরণটাই বা কেমন হওয়া উচিত। গুণী মানুষদের নিকট থেকেই নিজেকে গড়ে তোলার দীক্ষা নিয়েছি। কষ্ট কখনো কোনো মানুষেরই জীবনে স্থায়ী হয় না, যদি কষ্টকে হার মানানোর মতো ধৈর্য ধরে, সহ্য করে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পৌছুনোর চেষ্টা থাকে।

চুয়াডাঙ্গা মুক্তিপাড়ার কৃতীসন্তান সাহেদুজ্জামান টরিক। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। সিঙ্গাপুরে বসবাস করলেও তিনি মাঝে মাঝেই দেশে ফেরেন। বছরে অন্তত দু’বার আপন ঠিকানা তথা চুয়াডাঙ্গায় কয়েক দিন অবস্থান করেন। চুয়াডাঙ্গায় অবস্থানকালে তার কাটে ব্যস্ত সময়। পাঁচকমলাপুরে তার পিতা হাজি সামসুজ্জোহার প্রতিষ্ঠা করা মাদরাসার উন্নয়নে কাজ করেন। সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করে চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নের পথ খোঁজেন। যেখানেই তিনি বক্তব্য রাখেন, সেখানেই উপস্থিত সকলে স্তব্ধ হয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত বক্তব্য শোনেন। পরশু চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে তাকে সংবর্ধিত করা হয়। এ সময় তিনি তার জীবনের বাস্তব গল্প বলে শোনান। বলেন, কোনো সফল মানুষেরই একদিনে সাফল্য আসেনি। আসে না। আমারও আসেনি। সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর প্রথমের দিনগুলো কেটেছে এক কাতে শুয়ে। খাবারটাও ইচ্ছে মতো খবাওয়ার সুযোগ ছিলো না। আব্বাকে ফোনে নিজের কষ্টের কথা বলেছি। তিনি সাহস দিয়েছেন। সেই সাহসে সেখানে বিন্দুমাত্র সময় অবহেলায় না কাটিয়ে পরিশ্রমের মাধ্যমেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। যে যেখানেই আছেন, আপনারাও নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিজস্বতা ফুটিয়ে তুলে প্রতিষ্ঠা লাভ করুন। চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নে কাজে লাগুন। নিজেকে আগে গড়ে নিন, নিজেকে গড়তে না পারলে অন্যকে গড়বেন কীভাবে? সমাজকে কিছু দিতে হলে অবশ্যই অর্জন দরকার। সমাজের কিছু করতে হলে শুধু অর্থ লাগে না, নানাভাবেই সহযোগিতা করা যায়। যা করতে হলে দরকার সদিচ্ছা।

সাহেদুজ্জামান তরিকের জীবনগল্প শোনার পর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, সাহেদুজ্জামান টরিকের সংগ্রাম এবং সফলতা অনুকরণীয়। গতকাল সাহেদুজ্জামান টরিক আলমডাঙ্গা উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সাথে মতবিনিময়ে মিলিত হন। সন্ধ্যায় কিশোর কুমার কুণ্ডুর আমন্ত্রণে অংশ নেন। পরশু চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের মাধ্যমে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। পরশু সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবের সংবর্ধিত হন। আজ তিনি তার পিতার গড়ে যাওয়া মাদরাসায় সময় দেবেন। শিল্পমন্ত্রীকেও তিনি মাদরাসা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। আগামীকাল শনিবার মাদরাসায় চুয়াডাঙ্গার সম্মানিতদের মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

Leave a comment