ইবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা : সেই সাইফুল এখন ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি

 

ইবি প্রতিনিধি: ঢাকা থেকে অপহৃত হওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সেই সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়েছেন। গত বুধবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেল তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শেষবর্ষের ছাত্র অমিত কুমার দাস। ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম ঢাকা থেকে অপহৃত হন। দীর্ঘ ৫ মাস নিখোজ থাকার পর ২০১৩ সালের ১৯ জুন তাকে উদ্ধার করা হয়।

ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেল সমকালকে জানান, গত বুধবার রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র অমিত কুমার দাসকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়া ৬ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রলীগের অন্যরা হলেন- সহসভাপতি পদে মিজানুর রহমান মিজু (আইন বিভাগ ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ) ও ইমদাদুল হক শরীফ সোহাগ (বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে শাহীনুর রহমান (বাংলা বিভাগ ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষ) প্রচার সম্পাদক পদে ফাহিমুর রহমান সেতু। নতুন কমিটি আগামী বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমান কমিটিকে যতোদ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

সেই সাইফুল এখন সভাপতি: ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম দু বছর আগে ঢাকা থেকে অপহৃত হয়েছিলেন। পারিবারিক ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সাইফুল ইসলাম সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি মঙ্গলবার তিনি সাংগঠনিক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। ওইদিন রাতে ধানমণ্ডি ৩ নং অফিসে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উব-আলম হানিফের সাথে সাক্ষাৎ শেষে ফার্মগেট থেকে লেগুনায় চড়ে কাজীপাড়ায় অবস্থিত তার বাসার উদ্দেশে দিকে রওনা দেন। কাজীপাড়ার দিকে রওনা হওয়ার পর থেকে সাইফুলের ব্যক্তিগত মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ঘটনার দিন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শেরেবাংলা নগর থানা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা (ইবি থানা) দুটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে শেরেবাংলা থানা পুলিশ জুয়েল ও রানা নামে দুজনকে আটক করে। পরে পুলিশ তাদের দুজনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। অপহৃত হওয়ার প্রায় ৫ মাস পর তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ২০১৩ সালের ১৯ জুন অপহরণকারী তাকে রাজবাড়ির গোয়ালন্দ ঘাটের কাছে ফেলে চলে যায়। পরে এক মাইক্রোবাসচালকের মাধ্যমে তার সন্ধান পাওয়া যায়। সাইফুল ইসলাম নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার বাসা কুষ্টিয়া সদর থানার বংশীতলা গ্রামে। তার পিতার নাম খলিল উদ্দিন মোল্লা এবং মাতা ছবিরন নেছা। তিনি দু ভাই এবং চার বোনোর মধ্যে সবার ছোট। সাইফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অপহৃত হওয়ার পর সাইফুল উদ্ধার হলেও তাকে কে বা কারা অপহরণ করেছিলো সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। ফলে বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে।

Leave a comment