গাংনীর জাফর আকবরের বিরুদ্ধে ঠিকাদার সেলিমের ২৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর ঠিকাদার সেলিম রেজার প্রায় ২৮ লাখ টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন তার ঠিকাদারি ব্যবসায়িক পার্টনার মাইলমারি গ্রামের জাফর আকবর। নানা অজুহাতে হিসেব না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করে এখন অর্থ পাবেন না বলে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টি অবগত থাকলেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন জাফর। গতকাল বুধবার গাংনী উপজেলা সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করে টাকা আদায়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার সেলিম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঠিকাদার সেলিম রেজা জানান, বিগত ৫ বছর যাবত ঠিকাদার জাফরের সাথে পার্টনার হিসেবে কাজ করছেন তিনি। নিজের ও অন্য নামের লাইসেন্সে তারা দুজনে মিলে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার ২৩টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেন। সর্বশেষ ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে ধলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করেন। এ কাজে তারা মেসার্স আহসান হাবীবের লাইসেন্স ব্যবহার করেন। এছাড়াও ৬০ লাখ টাকায় তেতুঁলবাড়িয়া-ধলা রাস্তার কাজ করা হয়। যার চুক্তিমূল্য ৬০ লাখ টাকা। টেন্ডার সিকিউরিটি ঠিকাদার সেলিমের নিজ স্বাক্ষরে কৃষি ব্যাংক গাংনী শাখা থেকে সম্পন্ন করা হয়।

কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট অফিসে চূড়ান্ত বিল জমা দেন সেলিম রেজা। সরকারি বরাদ্দ স্বল্পতার কারণে উভয় বিলের অংশ বিশেষ টাকা উত্তোলন করেন এবং উত্তরা ব্যাংক মেহেরপুর শাখায় জাফর আকবরের সিসি অ্যাকাউন্টে জমা দেন সেলিম। এরপর সেলিম ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় অবস্থান শেষে প্রায় তিন মাস পর গত বছরের মে মাসে বাড়ি ফেরেন। জাফরের সাথে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের ব্যবসার চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশের কথা বললে তিনি গড়িমসি শুরু করে। জাফর চাতুরতার আশ্রয় নিয়ে সেলিমের অর্থ আত্মসাতের অপচেষ্টা করেন। একপর্যায়ে হিসেব দিতে অস্বীকৃতি জানায়। সেলিমের হিসেবে জাফরের কাছে তিনি ২৮ লাখের বেশি টাকা পাবেন। বারবার জাফরের সাথে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত না পেয়ে বিপাকে পড়েন সেলিম। টাকা আদায়ে তিনি গাংনী পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেন। পৌরসভা পর পর দুটি নোটিশ করে জাফরকে পৌর সালিসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু হাজির হননি জাফর আকবর।

সবশেষে মেহেরপুর পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন সেলিম। শুনানির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাফরকে দুটি নোটিশ করলেও তিনি হাজির হননি। তবে কি কারণে নোটিশের প্রক্রিয়া আর সামনের দিকে যাননি তা নিয়ে নানা সংশয় প্রকাশ করেন সেলিমসহ ঠিকাদারবৃন্দ।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ঠিকাদার আতিয়ার রহমান ও ফারুক হাসান জানান, ঠিকাদারি ব্যবসার দুর্দিনের মধ্যে সেলিম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে জাফরকে পার্টনার করেন। বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত জাফরের এ প্রতারণার আশ্রয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঠিকাদাররা। বর্তমানে টাকা আদায়ে বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সেলিম। তাই টাকা আদায়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন সেলিমসহ ঠিকাদারবৃন্দ।

গাংনী প্রেসক্লাব সভাপতি রমজান আলীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ ছাড়াও এলাকার ঠিকাদারবৃন্দ।