ডাকাতি ছিনতাই চাঁদাবাজি এবং বর্তমান সমাজ

 

চরমপন্থি নামধারী বাঘা বাঘা অস্ত্রধারীদের অধিকাংশেরই পতন হয়েছে। কেউ কেউ কারাগারে বন্দী। হাজতিদের কয়েকজন জামিনে মুক্তও হয়েছে। চুরি-ডাকাতি ছিনতাইসহ মোবাইলফোনে চাঁদাবাজি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। কয়েক বছর পর পুলিশ কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম নতুন করে গঠনসহ ওপেন হাউজ ডে’র মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতারোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। সমাজের সচেতনমহলের তরফ থেকেও পুলিশকে আরো কর্তব্যপরায়ণ হওয়ার তাগিদ দিচ্ছে। এতো কিছুর পরও কি স্বস্তি মিলবে?

সমাজের সাধারণ মানুষ ঘোরপ্যাচ বোঝে কম। সে কারণেই অনেকের সরল সোজা প্রশ্ন- চরমপন্থি গেলো, ডাকাতি ছিনতাই চাঁদাবাজি কেন? দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় এবং আয়তন অনুপাতে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে পুলিশ ফাঁড়ির সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। যেকোনো মোবাইলফোন ব্যবহারকারীর অবস্থান শনাক্তেরও প্রযুক্তি পুলিশ বিভাগের হাতে রয়েছে। অথচ মোবাইলফোনে হুমকিধামকি দিয়ে চাঁদাদাবি করা সন্ত্রাসী তেমন ধরা পড়ছে না। একের পর এক ডাকাতি হচ্ছে। অথচ ডাকাতির সাথে জড়িতদের ধরে ডাকাতি করা মালামাল উদ্ধারের খবর মিলছে না। সন্দেহজনক কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হলেও ডাকাতি-ছিনতাই করা মালামাল উদ্ধার করতে না পারায় পুলিশের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা সঙ্গত। যদিও জনসংখ্যা অনুপাতে পুলিশের অপ্রতুলতার অজুহাতকে একেবারেই অবজ্ঞাযোগ্য নয়। তারপরও ঘুরে ফিরে সেই একই প্রশ্ন- পুলিশ কেন পারছে না? এলাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ প্রত্যাশিত সফলতা পায় না। তবে কি সহযোগিতায় ঘাটতি? তা পেতেই কি কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম সক্রিয় করার বিশেষ উদ্যোগ? অবশ্যই নিজ নিজ এলাকা সন্ত্রাসমুক্ত করতে হলে নিজেদের সজাগ হতে হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করতে হয়। এলাকার সাধারণ মানুষ তা করতেও আগ্রহী। তবে যখন পুলিশের কোনো কোনো কর্তার কারণে আস্থাহীনতা ফুটে ওঠে তখনই সহযোগিতায় আগ্রহের বদলে অনাগ্রহ ফুটে ওঠে। এরকম কিছু থাকলে অবশ্যই পুলিশের মধ্যেও শুদ্ধি অভিযান দরকার। কেন না, খারাপের সংখ্যা সর্বক্ষেত্রেই ভালোর তুলনায় নগণ্য। নগণ্য কিছুর কারণে সমাজের সর্বনাশ কাম্য নয়।

চুয়াডাঙ্গায় র‌্যাব ক্যাম্প ছিলো। প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। প্রত্যাহারের বহু যুক্তি থাকলেও সাধারণ মানুষের অভিমত, চুয়াডাঙ্গায় র‌্যাব ক্যাম্প রাখতে না পারার আড়ালে অবশ্যই দায়িত্বশীলদের অবহেলা রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের উপস্থিতি এক সময়ের সন্ত্রাস কবলিত হিসেবে কলঙ্কিত জনপদবাসীকে আর কিছু না হলেও সাহসী করেছে। র‌্যাব ক্যাম্প না থাকায় তাতে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে তা বলার অবকাশ রাখে না। যদিও র‌্যাব-পুলিশের জোরালো পদক্ষেপের পাশাপাশি পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান গড়ে তোলা না হলে সন্ত্রাসমুক্ত সমাজের স্বপ্ন অনেকটাই অবান্তর। তবুও……