আলমডাঙ্গার মাজুর মাঠ থেকে সন্ধ্যারাতে এক মহিলাকে রক্তাক্ত জখম : অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার

আবারও ধর্ষণের অভিযোগ : ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে সম্মত না হওয়া আসামিরা পুনরায় এ নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে?

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার মাজুর মাঠ থেকে গতকাল সন্ধ্যারাতে মহিলাকে উদ্ধার করা হয়েছে। রক্তাক্ত জখম ও অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন তার নিকজনেরা। তাকে আলমডাঙ্গার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। ধর্ষণ শেষে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে বলে তুলে তার নিকটজনেরা বলেছেন, আদালতে দায়েরকৃত একটি ধর্ষণ মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে সেই ধর্ষণ মামলার আসামিরা পুনরায় এ নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে।

জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার গোস্বামী দুর্গাপুর গ্রামের বধূ দু সন্তানের জননীকে (২৬) গতকাল সন্ধ্যারাতে আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের মাঠ থেকে রক্তাক্ত জখম ও অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার এক পর্যায়ে সুখেরা খাতুনের জ্ঞান ফিরলে তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবার তিনি আলমডাঙ্গায় যান আদালতে দায়েরকৃত মামলার বিষয়ে পরামর্শের জন্য। সন্ধ্যায় ভ্যানযোগে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। পথিমধ্যে বকসিপুরে পৌঁছুলে ভ্যানচালক তাকে নামিয়ে দেন। সে সময়ে সুখেনা খাতুন একাই পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলেন। এক পর্যায়ে তার পূর্বে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলার আসামি আলমডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে সেকেন্দারের দু স্ত্রীর দু ছেলে সোহেল ও মোমিনসহ ৪ যুবক তাকে ধরে ফেলেন। ৪ যুবক যখন তাকে তাড়িয়ে ধরতে উদ্যত হলে সে বিপদের কথা মোবাইলফোনে তার স্বামীকে জানান। ৪ যুবকদের মধ্যে সোহেল ও মোমিন দু সৎ ভাই জোরপূর্বক ধরে রাস্তা থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে রক্তাক্ত জখমসহ অমানুষিক নির্যাতন করে। এক সময় মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বধূর ভগ্নিপতি গোস্বামী দুর্গাপুর গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, সংবাদ পেয়ে ধর্ষণের শিকার বধূর স্বামী ও তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে ক্লিনিকে নিয়ে আসি। তিনি জানান, সুখেনার স্বামী বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রায় এক বছর পূর্বে তিন লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিলো। কিন্তু বিদেশ যেতে পারেনি। সেই টাকা তার দু বন্ধু মাধবপুর গ্রামের সেকেন্দার ও গোস্বামী দুর্গাপুরের আবুলের ছেলে কালাম ওই বধূকে ফুঁসলিয়ে হাতিয়ে নেয়। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। টাকার জন্য সে সেকেন্দার ও কালামকে চাপ দেয়। টাকা ফেরত দিতে তারা অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সে সময় সেকেন্দার ও কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা হয়। বধূ প্রায় ৭/৮ মাস পূর্বে সে অভিযোগে তাদের নামে আদালতে মামলা দায়ের করে। সে মামলার বিষয়ে উকিলের সাথে পরামর্শ করতেই বধূ দু সন্তানের জননী আলমডাঙ্গায় গিয়েছিলো। উকিলের নিকট থেকে ফেরার পথে এ ধর্ষণ করা হয়েছে।

এসব তথ্য দিয়ে অভিযোগ তুলে বলা হয়েছে, পূর্বের মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বেশ কিছু দিন ধরে সেকেন্দার ও কালাম চাপ দিয়ে আসছিলো। কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ১ চেয়ারম্যান, ডাউকি ইউপির সাবেক এক চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলো। এরই এক পর্যায়ে এ পাশবিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ক্লিনিকের দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, মহিলাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা কয়া হচ্ছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা ও ফোলার চিহ্ন রয়েছে। সে গুরতর অসুস্থ। সে কারণে রোগীকে কিছুটা সুস্থ করে হারদী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে রেফার করা হবে।