লোভনীয় চাকরি দেয়ার নাম করে চুয়াডাঙ্গা গিরীশনগরের ৩ যুবককে ভারতে পাচার
বেগমপুর প্রতিনিধি: লোভনীয় চাকরির কথা বলে চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ গিরীশনগরের বাজার পাড়ার ৩ যুবককে ভারতে পাচার করে পাচারকারীচক্র। ১৬ দিন ভারতের ব্যাঙ্গালুরে মানবতের জীবনযাপনের পর প্রাণ বাঁচাতে পাচারকারীচক্রকে পুনরায় টাকা দিয়ে ৩ যুবককে ফিরতে হয়েছে বাড়ি। বিষয়টি জানাজানি করলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে পাচারকারীচক্রের সদস্যরা। পাচারকারীদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছে এলাকাবাসী।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গিরীশনগর বাজারপাড়ার হতদরিদ্র আবু বাক্কা অভিযোগ করে বলেন, লোভনীয় চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে একই পাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে পাচারকারীচক্রের সক্রিয় সদস্য সেকেন্দার আলী গত ১৬ নভেম্বর আমার ৩ ছেলে শফিকুল (৩৫), রফিকুল (৩২) ও হামিদুলকে (২৫) মাথাপিছু ৭০ হাজার করে টাকা নিয়ে যশোর বেনাপোল দিয়ে পাচার করে ভারতের ব্যাঙ্গালুরে নিয়ে যায়। সেখানে তেল কোম্পানি অথবা পানির কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি দেয়ার শর্ত থাকে। কিন্তু বিধিবাম আমার ছেলেরা সেখানে গিয়ে চাকরিত দূরের কথা তাদের কোনো খোঁজখবরই রাখেনি পাচারকারীরা। জীবন-জীবিকার তাগিদে পরিচয়ের মাধ্যমে শফিকুল ও তার ভাইয়েরা ঝিনাইদহ ব্যক্তির মাধ্যমে পাথর তোলার কাজ নেয়। বড় বড় পাথর একাকি তুলতে না পারলে তাদের ওপর নেমে আসতো শারীরিক নির্যাতন। এ মর্মান্তিক নির্যাতনের খবর বাড়িতে এলে আমি আবার পাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ করে টাকা দিয়ে আমার ছেলেদের বাড়িতে ফেরত আনি। পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া শফিকুল বলেন, আমরা দরিদ্র মানুষ হওয়ায় পাচারকারীদের প্রলোভনে পড়ে সেকেন্দারের হাতে টাকা দিয়ে ঝিনাইদহ ভুলটিয়া গ্রামের অলির ছেলে সেকেন্দারের মামাতো ভাই মুকুলের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংসারের কষ্ট ঘুচাতে ভারতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্গালুরে গিয়ে জানতে পারলাম বাস্তবতা আর পাচারকারীদের দেয়া কথার সাথে কাজের কোনো মিল নেই। খেয়ে না খেয়ে জীবনটা বাঁচিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে পেরেছি এটাই আমাদের ভাগ্য। তা না হলে সেখানকার মহাজনদের হাতুড়ির পিটুনি যে খেয়েছে সেই জানে। এখন এ ঘটনা কাউকে জানালে পাচারকারীরা বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দিচ্ছে আমাদের। এমনকি আমরা নাকি ভারতে বোমা বানাতে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে ছিলাম এমন কথাও প্রচার করছে পাচারকারীচক্রের সক্রিয় সদস্য সেকেন্দার ও তার লোকজন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেকেন্দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইলফোনে জানান, আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত না। তারা ভুলটিয়ার মুকুলের মাধ্যমে ভারতে গিয়েছিলো।