রাজার ওপর হামলাকারীরা আত্মগোপন করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার

বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত : গ্রেফতারকৃত তিনজন জেলহাজতে

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ কর্মী রাজাকে কুপিয়ে জখম মামলার দু আসামি মিন্টু ও শফিককে গণধোলাই দিয়েছে জীবননগরের সেনেরহুদা গ্রামবাসী। চুয়াডাঙ্গা পুলিশের তাড়া খেয়ে আত্মগোপন করতে যায় রাজার ওপর হামলা মামলার চার আসামি। এ সময় তাদেরকে সন্ত্রাসী ভেবে সেনেরহুদা গ্রামের মাঠে ধরে গ্রামবাসী গণধোলাই দেয়। পরে জীবননগর থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

DSC07705

পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা গত শুক্রবার রাতে চুয়াডাঙ্গা গমপট্টি এলাকার শেখ জামাল স্পোর্টিং ক্লাবে হামলার ঘটনা ঘটে। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর এবং ছবি ও অন্যান্য জিনিস তছনছ করা হয়। শনিবার সকালেও আরেক দফা ক্লাবে হামলা চালানো হয়। ফার্মপাড়ার রনি, জনি, মিন্টু, দিপু, টোটন, শফিক, আরমান, রাজু হোসেন এবং হকপাড়ার জামাল ও রানা হামলা চালায় বলে থানায় মামলা করা হয়।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাবেক পৌর কমিশনার আব্দুস সামাদের অফিসে হামলা চালায় একদল যুবক। এখানে বসে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর যুবলীগ কর্মী চুয়াডাঙ্গা বাগানপাড়ার রমজান আলী ওরফে রানার ছেলে রাজু আহমেদ রাজা (২৪)। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাজাকে কোপানো হয়। রাজার হাতে দুটি কোপ লাগে। বাঁ হাতের দুটি আঙুল কেটে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। ওই দিনই রানা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ শুরু করে অভিযান।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (তদন্ত) এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান খানের নেতৃত্বে শাদা পোশাকে পুলিশ বিভিন্নভাবে অভিযান চালায়। মোটরসাইকেল নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয় পুলিশ। পুলিশের এই অভিযানে মামলার আসামি ফার্মপাড়ার মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে আরমান, শুকুর আলীর ছেলে রাজু হোসেন ও হকপাড়ার চান্দু শেখের ছেলে রানাকে সদর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।

অন্য আসামিরা কোনো কূলকিনারা না পেয়ে চুয়াডাঙ্গা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। রাজার ওপর হামলা মামলার আসামিরাসহ বিভিন্ন অপরাধী শহর ছেড়ে আত্মগোপন করে। শহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক দিন পর কিছুটা হলেও পুলিশ প্রশাসনের এহেন কার্যক্রমে স্বস্তি ফিরে আসে।

সূত্র জানায়, পুলিশের তাড়া খেয়ে চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার মিন্টু, জনি, জামাল ও হকপাড়ার শফিক জীবননগরের সেনেরহুদায় আত্মগোপনের চেষ্টা করে। গতরাত ১১টার দিকে উথলী সেনেরহুদা গ্রামের মাঠ দিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসীর হাতে আটক হয় তারা। এ সময় গ্রামবাসীর সাথে তারা সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করে। গ্রামবাসী তাদেরকে সন্ত্রাসী ভেবে গণপিটুনি দেয়। এ সময় দুজন পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে ফার্মপাড়ার বুদোর ছেলে মিন্টু (২৭) ও হকপাড়ার ফজলু মিস্ত্রির ছেলে শফিক ওরফে শফিক কানা (২৬)। জীবননগর থানা পুলিশ খবর পেয়ে মিন্টু ও শফিককে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে গতরাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দুজনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (তদন্ত) এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান খান গতরাতে দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। চুয়াডাঙ্গা শহরে কেউ অপকর্ম করে ঘুরে বেড়াবে তা হতে দেবো না। অপরাধ দমনে পুলিশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a comment