বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় একের পর এক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেই চলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির খবরের পর এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
মঙ্গলবার দৈনিক মাথাভাঙ্গায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে জালিয়াতির ঘটনায় ৬ জন পরীক্ষার্থী ও একজন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এসব পরীক্ষার্থী মোবাইলফোনে এসএমএস দেখে ও হেডফোনে শুনে উত্তরপত্র পূরণ করছিলো বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার হলে মোবাইলফোন ব্যবহারের ঘটনায় ৩৫ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পদক্ষেপের পরও জালিয়াতি থেমে নেই। ভর্তি পরীক্ষার তৃতীয় দিনেও ২০ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা মহামারী আকার ধারণ করছে। এ পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির ঘটনা ঘটলে মেধাবীদের সুযোগ সংকুচিত হয়। আমরা মনে করি, ভর্তি পরীক্ষায় যে কোনো ধরনের জালিয়াতি বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। অতীতের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এটি স্পষ্ট মোবাইলফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে এসব জালিয়াতি হয়ে থাকে। বারবার চেষ্টা করেও কেন পরীক্ষার হলকে এ ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসমুক্ত রাখা যাচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে ভর্তি পরীক্ষায় যে জালিয়াতি করা হয়, তা বন্ধে মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপরও পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের কাছে মোবাইলফোন পাওয়া গেল কীভাবে, তা তদন্ত করে বের করতে হবে। গতকালও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব অনিয়ম ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিশ্চিতে এর বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হলো দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে ভর্তি হওয়ার জন্য যারা অসৎপথ অবলম্বন করেন তাদের বিরুদ্ধে নমনীয় সিদ্ধান্ত নয়, শক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।