সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে দুটি ভর্তি নীতিমালা

৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সংরক্ষিত

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রথম থেকে নবম শ্রেণীতে ভর্তি ফি ও ফরমের মূল্য, ভর্তি প্রক্রিয়া এবং বয়স নির্ধারণ করে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের জন্য পৃথক দুটি ভর্তি নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী এবারও প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। আবেদন করা যাবে অনলাইনেও। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।

ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি: প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আগামী ১ জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীর বয়স ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে হতে হবে। নীতিমালায় প্রথম শ্রেণির লটারি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভর্তি কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে স্বচ্ছতার সাথে লটারি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচনের পাশাপাশি অপেক্ষমান তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী বাছাই করতে হবে। আর জেএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে। দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণমান ৫০। এর মধ্যে বাংলা ১৫, ইংরেজি ১৫ এবং গণিতে ২০। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান ১০০। এর মধ্যে বাংলা ৩০, ইংরেজি ৩০ ও গণিতে ৪০। ভর্তি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণি উত্তীর্ণদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

ভর্তি ফরম মূল্য ও ফি: নীতিমালা অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ২০০, সম্পূর্ণ এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ১৫০ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা ব্যতীত দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন ফরমের জন্য সর্বোচ্চ ১০০ টাকা গ্রহণ করা যাবে। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় ৫০০ টাকা, পৌর (উপজেলা) এলাকায় এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার গ্রহণ করা যাবে। ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি হবে না।

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থীর ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে আট হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার বেশি গ্রহণ করা যাবে না। উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না।

এ নীতিমালা বাস্তবায়ন ও অনিয়ম পর্যবেক্ষণে তিন ধরনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে প্রধান করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ঢাকা মহানগরী, জেলা প্রশাসককে প্রধান করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা পর্যায়ের স্কুলগুলোর জন্য তিনটি পৃথক ভর্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভর্তির ফরম এবং ভর্তির ফি বাবদ সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। এটি করলে সরকার এমপিও বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নীতিমালার ব্যত্যয় করলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি বা একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিলসহ প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল করা হবে।