আত্মহত্যা প্রবণতা এবং যথাযথ আইন প্রয়োগ

 

দিন যতো যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ পার্শ্ববর্তী এরাকায় আত্মহত্যা প্রবণতা ততোই বাড়ছে। শুধু আত্মহত্যা নয়, পারিবারিক কিছু রহস্যজনক অপমৃত্যুর নেপথ্যও বেমালুম ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। ফলে অভিন্ন অপরাধ প্রবণতা ছড়াচ্ছে। প্রতিকার? দেশে আইন প্রচলিত থাকলেও সর্বক্ষেত্রে যথাযথভাবে তা প্রয়োগ হচ্ছে না।

গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত পৃথক ৪টি প্রতিবেদনের তিনটি আত্মহত্যা এবং একটি রহস্যজনক মৃত্যু এবং পরবর্তী পরিস্থিতি আইন প্রয়োগে গড়িমসির চিত্র স্পষ্ট। আলমডাঙ্গার চিলাভালকিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা। রহস্যজনক না হলেও অপমৃত্যুর প্রকৃত কারণ শনাক্ত না করে দাফনের সুযোগ কি আইন প্রয়োগে গড়িমসির সাক্ষ্য বহন করে না? মৃতদেহে আঘাতের দাগ রয়েছে বলে প্রতিবেশীরা অভিযোগ উত্থাপন করলেও পরিবারের সদস্যরা তা অস্বীকার করে পুলিশকে খবর না দিয়েই লাশ দাফন করেছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন- গ্রামের এমন কেউ কি ছিলেন না যে, তিনি পুলিশে খবর দেবেন? চৌকিদার দাফদাররাই বা কোথায়? অপর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী কয়েকজনের কয়েকদিনের কটুক্তি, আর স্ত্রীর অবিশ্বাসে আত্মঘাতী হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ভুলটিয়া গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর রবজেল। আত্মহত্যায় প্ররোচনার বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না যেমন, তেমনই হাতুড়ের আনাড়ি হাতে পাকস্থলি পরিষ্কারের কারণে তার মৃত্যু অনিবার্য হয়ে ওঠে বলে হাসপাতালের চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন। এরপরও কি ওই হাতুড়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? তৃতীয় পাতায় প্রকাশিত অপর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়ের মাস না ঘুরতেই আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়ে হাসপাতালে নববধূ। কেনো সে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে, আত্মহত্যার চেষ্টা চালানার সুযোগ কি দেশের প্রচলিত আইনে আছে? তার বিরুদ্ধে কি ন্যূনতম আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? প্রশ্নগুলোর একটিরও হ্যাঁসূচক জবাব মিলবে না। তা হলে আত্মহত্যা প্রবণতা রোধ হবে কীভাবে?

আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে অবশ্যই যথাযথ তদন্ত প্রয়োজন। শুনেও না শোনা বা গতানুগতিকভাবে পেটে ব্যথা, মস্তিষ্ক বিকৃত রোগে ভুগছিলো, কিংবা মানসিক রোগী ছিলো বলে অপমৃত্যু মামলা থানার দস্তাবেজভুক্তকে যথাযথ আইন প্রয়োগ বলা চলে না। অপমৃত্যুর খবর জানি না বলে দায় এড়ানো গেলেও, দায়িত্বহীনতাটাই ফুটে ওঠে।