স্টাফ রিপোর্টার: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল কারেজ জাতের আলু আবাদ হচ্ছে। ইউএসএইড’র সহযোগিতায় দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুরের কনিকা সিড কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড ও শোভা এগ্রো মার্কেটিঙের সহযোগিতায় সদর ও জীবননগর উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এলাকার কৃষকরা উৎপাদনে নেমেছেন।
পটোটো চিপসের কাঁচামাল হিসেবে এ আলুর ব্যাপক চাহিদার কথা বিবেচনা করে উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতেও এ আলুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এতে এলাকার কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের ময়না চাপড়া মাঠে কৃষক আব্দুল কুদ্দুসের জমিতে বীজ রোপণের মধ্যদিয়ে কারেজ জাতের আলু উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করা হয়। এ সময় কনিকা সিড কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড ও শোভা এগ্রো মার্কেটিঙের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. নুর আলম লিটন, প্রোডাকশন ইনচার্জ কৃষিবিদ নাজিম উদ্দিন, সহকারী প্রোডাকশন অফিসার মো. আতিয়ার রহমান, ব্যবস্থাপক মোমিনুল ইসলাম, ইউএসএইড’র এগ্রিকালচার ভ্যেলু চেইন- এভিসি প্রকল্পের রিজিওনাল প্রোগ্রাম অফিসার মো. জসিম উদ্দিন এবং মো. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ি এলাকায় ২৫ জন কৃষক ১০ একর জীবননগর উপজেলার বাঁকা ও বৈদ্যনাথপুরের ৪৫ জন কৃষক আরো ২০ একর জমিতে এ আলুর আবাদ করছেন। বাঁকা গ্রামের কৃষক হানেফ আলী চার বিঘা, আব্দুল কুদ্দুস তিনবিঘা, আজিজুল ধাবক ৫০ শতক, হাফিজুর রহমান দু বিঘা ও রহিদুল ইসলাম ২৫ কাঠা জমিতে গতকাল বৃহস্পতিবার কারেজ জাতের আলু রোপণ শুরু করেছেন।
কৃষিবিদ নাজিম উদ্দিন জানান, প্রচলিত অন্যান্য আলু উৎপাদনকাল ৮০ দিনের বেশি হলেও কারেজ জাতের আলু ৯০ থেকে ১০০ দিন পর্যন্ত জমিতে রাখা যাবে। অন্যান্য জাতের আলু প্রতিবিঘা জমিতে ৮০ থেকে ৯০ মণ উৎপাদন হলেও কারেজ জাতের আলু ১২০ থেকে ১৫০ পর্যন্ত উৎপাদন হবে। কৃষক আব্দুল কুদ্দুস জানান, জেনেশুনেই এবার তিনিসহ গ্রামের কৃষকরা কারেজ জাতের আলু আবাদ করছেন। এবার ফলন ভালো হলে আগামী বছর আরো বেশি জমিতে এ আলুর আবাদ করা হবে।
কনিকা সিড কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড ও শোভা এগ্রো মার্কেটিঙের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. নুর আলম লিটন জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গাতেই প্রথম কারেজ জাতের আলু আবাদ করা হচ্ছে। এ আলু উৎপাদনে প্রতিবিঘায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হলেও প্রতিবিঘায় খরচবাদে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে। এতো স্বল্প সময়ে এতো টাকা লাভ আর কোনো ফসলে সম্ভব নয়। তিনি আরো জানান, কৃষকের মোট খরচের প্রায় অর্ধেক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক এসব চাষিদেরকে মান সম্পূর্ণ বীজ, সার ও বিঘাপ্রতি বিনাসুদে ১০ হাজার টাকা অগ্রিম হিসেবে কৃষি সহায়তা দেয়া হয়েছে। অন্যান্য জাতের আলু উৎপাদন করলে ক্রেতার পেছনে কৃষকদের ঘুরতে হয়। কিন্তু, কনিকা সিড কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড ও শোভা এগ্রো মার্কেটিং কারেজ জাতের সকল আলু কৃষকদের কাছ থেকে যথাযথ মূল্যে রফতানিযোগ্য হিসেবে কেনা হবে।