স্ত্রীর প্রেমিক আনার গ্রেফতার : পথের কাঁটা সরাতে খুন করা হয় পরেশকে

মুজিবনগরে নিহত সেলুনব্যবসায়ী পরেশে খুনের নেপথ্য ফাঁস : পুকুর থেকে মোবাইলফোন উদ্ধার

 

মুজিবনগর প্রতিনিধি: পরেশের স্ত্রী চম্পা দাসীর সাথে দীর্ঘদিনের পরকিয়া সম্পর্ক। পরকীয়া প্রেমিক আনারুল ইসলাম ওরফে আনারের ঘর বাধার স্বপ্ন। কিন্তু ওই পথে কাঁটা হয়ে দাড়ায় চম্পা দাসীর স্বামী পরেশ। পরেশ বেঁচে থাকতে প্রেমিকা চম্পা দাসীকে পাওয়া সম্ভব নয়। আর তাইতো পথের কাঁটা পরিষ্কার করতেই খুন করা হয় পরেশকে। মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর গ্রামের অভিযুক্ত খুনি আনারুল ইসলাম ওরফে আনার (৪০) এভাবেই পুলিশের কাছে পরেশ হত্যাকাণ্ডের রোমহর্ষক স্বীকারোক্তি দিয়েছে। স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন মেহেরপুর সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল জলিল।

আনারের স্বীকারোক্তিতে গতকাল বুধবার দুপুরে মুজিবনগরের স্বরস্বতী খালে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। পরেশের ব্যবহৃত মোবাইলফোন ও যে ধারালো হেঁসো দিয়ে জবাই করা হয় তা স্বরস্বতী খালে ফেলে দিয়েছিল আনার। দু ঘণ্টাব্যাপি তল্লাশির একপর্যায়ে পরেশের সেই মোবাইলফোনটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। দীর্ঘসময় ধরে তল্লাশি করেও হেঁসো উদ্ধার হয়নি। তবে পরবর্তীতে আরো তল্লাশি চালানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল আরো জানান, পরেশের মরদেহ উদ্ধারের পর কয়েকটি বিষয় মাথায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছিলো। একপর্যায়ে স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্পৃষ্ট হয়। সেমতে গতকাল সকালে আনারকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য প্রদান করে। সেমতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের মাত্র চার দিনের মাথায় হত্যাকারী গ্রেফতার ও রহস্য উদঘাটন হওয়ায় নিহতের পিতার পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। তারা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হওয়ায় এলাকার মানুষও পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যা পাওয়ার পর পরেশের স্ত্রী চম্পা দাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে পরকীয়ার বিষয়টি উঠে আসে। সেমতে আনারকে গ্রেফতার করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ড কিংবা হত্যা পরিকল্পনার সাথে চম্পা দাসী জড়িত কি-না তা এখনো পরিষ্কার নয়। এজন্য তাকে আটক করা হয়নি। মামলাটির আরো তদন্ত শেষে বিষয়টির সুরাহা আশা করছেন তিনি।

উল্লেখ্য, বল্লভপুর গ্রামের জামাই চুয়াডাঙ্গার ধুতোরহাট গ্রামের সেলুন ব্যবসায়ী পরেশকে গত শনিবার রাতে বল্লভপুর গ্রামের জোঁকার মাঠের একটি আম বাগানে গলাকেটে হত্যা করা হয়। নিহতের স্ত্রী চম্পা দাসী ওই দিন সন্ধ্যায় অজ্ঞাত নামা সন্ত্রাসীদের নামে মুজিবনগর থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। তবে পরেশের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মরদেহ চুয়াডাঙ্গার ধুতুরহাট গ্রাম এলাকায় সৎকার করা হয়।