স্টাফ রিপোর্টার: বদলে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সামগ্রিক চিত্র। সিভিল সার্জনের অগ্রণী ভূমিকার কারণে সব কিছুতে একটি বিধি সম্মত পরিবর্তন আসছে। তবে কতিপয় চিকিৎসক ও নার্সের কারণে সিভিল সার্জন পেরে উঠছেন না। হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসকরা আগের নীতিতেই অটল থাকছেন। তার মানে সেই বেলা ১টা। সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কেউই থাকতে চাচ্ছেন না। কয়েকজন দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও অধিকাংশ চিকিৎসকই দেরিতে আসেন আর বেলা ১টা বাজলেও চলে যান। ফলে সিভিল সার্জনের কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না। তিনি সরকারি বিধিবিধান মেনে চলার নির্দেশ দিলেও তা থোড়ায় কেয়ার করছেন সিংহভাগ চিকিৎসক ও কতিপয় নার্স।
তবে অনেকেটা পরিবর্তন এসেছে হাসপাতালের সামগ্রিক কাজেকামে। হাসপাতালের খাবার চুরিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। পাশাপাশি চোরাই খাবারসহ হাতেনাতে ধৃত সুফিয়ারর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের ওষুধ যাতে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, সে ব্যাপারে তিন চিকিৎসক বিশিষ্ট একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তিন চিকিৎসক গতকাল মঙ্গলবার থেকে তদারকি কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ কমিটি আগামী তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন সিভিল সার্জনের কাছে। গতকাল চিকিৎসক সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. নুরুদ্দিন রুমী, ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন ও ডা. রাজিবুল ইসলাম গতকাল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড, গাইনি ওয়ার্ড, আউট ডোর ও হাসপাতালের স্টোর রুমে গিয়ে ওষুধের হিসাব নিকাশ করেন।
গতরাতেও গাইনি ওয়ার্ডে রোগীর কাছ থেকে বকশিসের নামে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সোনামনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন গতরাতে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স তরুলতা এ সময় ১ হাজার টাকা বকশিস দাবি করেন। শেষমেশ ৭শ টাকা আদায় করে নেন সিনিয়র স্টাফ নার্স তরুলতা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের আয়ও বাড়তে শুরু করেছে। অভিযুক্ত এক্স-রে বিভাগ গত অক্টোবর মাসে সরকারি আয়ের খাতে জমা দেয় ১৬ হাজার ৭০৫ টাকা। কিন্তু গত ৬ দিনে এ বিভাগে আয় দেখানো হয়েছে ৯ হাজার ৮১৫ টাকা। অন্যদিকে প্যাথলোজি বিভাগেও একই চিত্র ধরা পড়েছে। তারা গত অক্টোবর মাসে জমা দেয় ১৩ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু গত ছয়দিনে আয় দেখানে হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ টাকা। গত মাসের তুলনায় এসব আয় অনেক বেশি।
অন্যদিকে আগে শুধু শর্ট সিলিপের মাধ্যমে লাগাতার ওষুধ তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটলেও এখন কাউকেই শুধু শর্ট সিলিপে ওষুধ দেয়া হচ্ছে না। বড় টিকেট থাকলেই কেবল তার সাথে মিলিয়ে শর্ট সিলিপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
হাসপাতালের আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেখা যায় দুজন শ্রমিক হাসপাতাল চত্বরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছেন।