জীবননগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মুসলিমা পরকীয়া ও অনৈতিক সম্পর্কের কথা অস্বীকার

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রাজনগর গ্রামের বখতিয়ার রহমানের প্রাক্তন স্ত্রী মুসলিমা খাতুন জীবননগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমের সাথে পরকীয়া ও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে প্রাক্তন স্বামী বখতিয়ার রহমানের সাংবাদিক সম্মেলনের জবাবে গতকাল সোমবার এ সাংবদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মুসলিমা তার প্রাক্তন স্বামীর আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

স্বামী বখতিয়ার রহমানের সাংবাদিক সম্মেলনের ৬ দিনের মাথায় মুসলিমা খাতুন গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগ এনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি অনেক কষ্টে আছি। আমার স্বামী বখতিয়ার রহমান সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনের নামে আমার বিরুদ্ধে যে বক্তব্য প্রদান করেছে তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ওই দিন বখতিয়ার যে বক্তব্য দিয়েছে তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কল্পকাহিনী। আমার সাথে মূলত কারো কোনো পরকীয়া সম্পর্ক নেই। পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থাকাকালে জনগণের সেবা করার জন্য যার সাথে যতোটুকু কথা বলার প্রয়োজন বলে মনে করেছি ততোটুকুই বলেছি। খাদ্যের সাথে বিষ মিশিয়ে বখতিয়ারকে খাওয়ালে তার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা ছিলো। তাকে খাদ্যে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছি মর্মে তার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। আমি কারো প্ররোচনায় বখতিয়ার হত্যার অপচেষ্টা করেছি এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার বাড়ির জমি দু মেয়ের নামে লিখে দিয়েছে সত্য। তবে বখতিয়ার চার বিঘা জমি বিক্রি করে বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে তা সঠিক না। বাড়ি মূলত আমাদের উভয়ের টাকায় নির্মিত হয়েছে। আমি বখতিয়ারের বিরুদ্ধে কোথাও হয়রানিমূলক মামলা করেনি। আমার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ে সানজিদা ইয়াসমিনের নামের জমি অভিভাবক হিসেবে বখতিয়ার তার বোনের নিকট বিক্রি করায় জমি উদ্ধারে দলিল বাতিল ও কন্যার অভিভাবকত্ব দাবি করে আদালতে মামলা করেছি। আমার কারণে বখতিয়ারের জীবন নষ্ট হয়েছে এ কথা যেমন ঠিক না তেমনি বখতিয়ারই বরং আমাকে দীর্ঘদিন নির্যাতন করেছে। অপরদিকে আমার বড় মেয়ে লাবণীর নামের জমি বখতিয়ার তার নামে রেজিস্ট্রি করে নিতে চাইলে মেয়ে তার অংশের জমি রক্ষার জন্য আমার নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়। বখতিয়ার একজন চরিত্রহীন। তার ব্যাপারে প্রতিবাদ করলেই সে আমার ওপর নির্যাতন চালাতো। আমি তার নির্যাতনের অতিষ্ট হয়ে বড় কন্যার সাথে পরামর্শ করে বখতিয়ার রহমানে স্বেচ্ছাই তালাক প্রদান করি। সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক ছিলো না এখনও নেই। আমাকে ও জাহাঙ্গীর আলমকে জড়িয়ে যে সব কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হয়েছে তা মিথ্যা। একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে এ ধরনের অপপ্রচারে মেতে উঠেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বখতিয়ার রহমান তাকে কীভাবে নির্যাতন করেছে এবং কী ধরনের চরিত্রহীন ব্যক্তি তা তিনি প্রমাণ করতে পারেননি। তাকে নির্যাতন করেছে এবং বখতিয়ার কোন মেয়েকে নিয়ে রাত্রযাপন করেছে এমন অভিযোগের ঘটনা কেউ দেখেছে কি-না কিংবা তিনি কাউকে বলেছেন কি-না এমন প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দেননি। মুসলিমা খাতুনের প্রাক্তন স্বামী বখতিয়ারের অসমাজিক কার্যকলাপ তার কন্যা দেখেছে মর্মে দাবি করলেও তার পাশে উপস্থিত থাকা কন্যা লাবণীও তা প্রমাণ করতে পারেনি। এ সময় কন্যা লাবণী কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই বলতে থাকে যে আমরা তাকে (বখতিয়ার) পিতা বলে মানি না, সে একজন পাগল। মুসলিমা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে বখতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে কিছু অপ্রাসঙ্গিক অভিযোগ উপস্থাপন করেন।

এ ব্যাপারে বখতিয়ার রহমান বলেন, মুসলিমা খাতুন আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করেছে। তার কোনো ভিত্তি নেই। সে মূলত নিজের অপরাধ ঢাকতেই আমার বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ভিত্তিহীন, কল্পকাহিনী তুলে ধরেছে। আমি কতোটুকু ভালো-মন্দ তার জ্বলন্ত সাক্ষী আমার প্রতিবেশী ও সমাজের মানুষ। সমাজের মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করলেই জানা যাবে কে ভাল কে মন্দ।