ঝিনাইদহে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে গড়ে উঠছে না ভালো মানের খেলোয়াড়
শাহনেওয়াজ খান সুমন: হাজিরা খাতা ঠিকঠাক রেখে বেতন ভাতা ভোগ করছেন ঝিনাইদহের জেলা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষকরা। তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে ম্যাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নিয়মিত খেলাধুলা হচ্ছে না। তাই মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্রীড়া শিক্ষক থাকার পরও গড়ে উঠছে না ভালো মানের খেলোয়াড়। দু-একজন জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পেলেও তারা নিজেদের প্র্যাকটিসে এবং নিজেদের যোগ্য করে তুলে এ ধরনের খেলাধুলা করছেন। ফলে সরকারের প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হলেও কোনো সুফল পাচ্ছে না ক্রীড়া বিভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে মেধাবিকাশ এবং ভালো খেলোয়াড় গড়ে তোলার জন্য নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে খেলার মাঠ ও প্রশিক্ষণের রয়েছে ক্রীড়া শিক্ষক। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানেই নিয়মিত খেলাধুলা হচ্ছে না। ক্রীড়া শিক্ষকের দায়িত্ব-কর্তব্য প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যেই যেনো সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া শিক্ষক থাকার পরও গড়ে উঠছে না ভালো মানের খেলোয়াড় অথচ, এ সকল ক্রীড়া শিক্ষকগণ হাজিরা খাতা ঠিকঠাক রেখে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে বেতন ভাতা ভোগ করছেন। প্রতি বছরই ক্রীড়া বিভাগের নতুন খেলোয়াড়ারের খোজে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রীড়া শিক্ষকগণ কয়েকদিনের প্রশিক্ষন দিয়ে প্রতিযোগিতাই অংশ নিচ্ছেন। তাও আবার অবহেলার অন্তঃনেই।
অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুল-কলেজে নিয়মিত খেলাধুলা না হওয়ায় আজ ছেলেমেয়েদের নৈতিকতা, দলনেতাকে মান্য করা, পরিচালকের নির্দেশ অনুসরণ করা শিখছে না। শিক্ষাজীবন থেকেই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিপথগামী হচ্ছে। তবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েরা টিফিন আওয়ারে স্ব-উদ্যোগে মাঠে ক্রিকেট বা ফুটবল খেললেও হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল, ভলিবল, কাবডি, অ্যাথলেটিক্সসহ অন্যান্য খেলার কোনো উদ্যোগ নেই। ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক প্রায় প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানেই ক্রীড়া শিক্ষক রয়েছে।
কিন্তু প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানেই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো প্রকার খেলাধুলা হয় না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান নানা আজুহাতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকেও নিজেদেরকে বিরত রাখে। অভিযোগ রয়েছে, জেলার অধিকাংশ স্কুল ও কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের অধিকাংশরই খেলাধুলা সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। তারা ডোনেশন নামক টাকার মাধ্যমে এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়েছেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের ফুলহরি কাজিপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত খেলাধুলা হয়ে থাকে। তবে সেগুলো সরকারের নির্ধারিত প্রতিযেগিতা। আর এ প্রতিযোগিতার আগে কয়েক দিন তো অনুশীলন করাই লাগে। তবে নিয়মিত না। আর এ বছর থেকে ক্রীড়া বিভাগে আলাদা করেই একটা একশ নম্বরের পাঠ্যপুস্তক চালু হচ্ছে। যা খেলাধুলা সম্পকে প্রতিষ্ঠানের সকলেই ভালোভাবে জানতে পারবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জীবন কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা নিয়মানুযায়ী ফুটবল, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের ইভেন্টের আয়োজন করে থাকি। তবে এখানে বিভিন্ন বয়স আনুযায়ী দল গঠন করা হয় এবং খেলোয়াড়রা তাদের নৈপূণ্য প্রদর্শন করে থাকে। এখান থেকে ভালো মানের খেলোয়াড় তৈরি হয়। যারা জেলার এবং দেশের মানকে আরো বৃদ্ধি করে থাকে। তবে স্কুল বা কলেজে নিয়মিত খেলাধুলা হলে এ বিষয়ে সুফল পাওয়া যাবে।