প্রক্টরের গাড়ি ব্যবহার করে ইবি ছাত্রলীগ নেতার অতিরিক্ত মদপান : অত:পর হাসপাতালে

 

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়ি ব্যবহার করে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গিয়ে অতিরিক্ত মদ পানের অভিযোগ উঠেছে। একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ওই গাড়িতে করে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম আবুজর গিফারি গাফফার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্মআহ্বায়ক।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাসযোগে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীসহ আবুজর গিফারি গাফফার ঝিনাইদহের শৈলকুপায় যান। সেখানে একটি ভাটিখানা (মদের দোকান) থেকে মদ কিনে পান করেন আবুজর গিফারি গাফফার। অতিরিক্ত মদ পানের ফলে তিনি একপর্যায়ে অসুস্থতাবোধ করেন এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে রাত নয়টার দিকে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে ওয়াশ করা হলে তিনি সুস্থ হন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স নুরজাহান বেগম বলেন, গত বুধবার রাত নয়টার দিকে কয়েকজন যুবক গাফফার নামে একজনকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর তিনি সুস্থতাবোধ করলে হাসপাতাল থেকে ফিরে যান। নাম না প্রকাশ করার শর্তে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, তিনি নেশা করে এসেছিলেন। আর নেশাজাতীয় দ্রব্যটি সম্ভবত অ্যালকোহল ছিলো।

তবে মদ পানের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা আবুজর গিফারি গাফফার। তিনি বলেন, রাতে পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়ায় হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ডাক্তার গ্যাস পাম্প করে ছিলেন। এছাড়া প্রক্টরের গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।

এদিকে প্রক্টরের গাড়ি ব্যবহার করে ছাত্রলীগ নেতার মদের দোকানে যাওয়ার ঘটনায় ক্যাম্পাসে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রক্টরের গাড়ি ব্যবহার করে একজন ছাত্র কীভাবে মদের দোকানে যেতে পারে তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত.ম. লোকমান হাকিম বলেন, রাতে গাড়ি আমার কাছে ছিলো না। তাই কে বা কারা আমার গাড়ি ব্যবহার করেছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

প্রক্টরের গাড়িচালক মো. আকুল বলেন, গত বুধবার রাতে শৈলকুপায় গিয়েছিলাম সত্যি। তবে রাত আটটার দিকে সেখান থেকে ফিরে এসেছি। এরপর কাউকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সক্রিয় একজন নেতা বলেন, গাফফার বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেয়ার নাম করে অন্তত স্থানীয় ২০-২৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কাউন্সিল হওয়ার কথা রয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, এবার গাফফার পদ পাচ্ছে না এটা প্রায় নিশ্চিত। এ নিয়ে তিনি খুব হতাশার মধ্যে আছেন। আর এ কারণে হয়তো তিনি মদ পান করেছেন।