১৬ বছরেও টাকা পাননি ঝিনাইদহ বাসটার্মিনালের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকরা

 

শৈলকুপা প্রতিনিধি: ১৬ বছরেও টাকা পাননি ঝিনাইদহের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালের জন্য এলএ (সা.) ০৪/১৯৯৭-৯৮ নং কেসের অধিগ্রহণকৃত জমির প্রকৃত জমির মালিক। জেলা প্রশাসকের বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়েও এখন পর্যন্ত একটি টাকাও পাননি তারা।

জানা যায়, ১৯৯৭-৯৮ সালে বাসটার্মিনালের জন্য ঝিনাইদহের ১৫৮ নং গোবিন্দপুর মৌজায় ৩.৯৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ঝিনাইদহ পৌরসভার কাঞ্চননগর গ্রামের মৃত খোদা বক্স ও ফুলি নেছার মেয়ে হাসিনা বেগম ও তার দু বোনের ৩৩ শতক জমি বাসটার্মিনালের জন্য হুকুম দখল করা হয়। এর ক্ষতিপূরণ বাবদ তাদের পাওনা ৬ লাখ টাকা। জমির প্রকৃত মালিক খোদা বক্সের ওয়ারেশসূত্রে তিন কন্যা হলেও অন্য একটি চক্র ঝিনাইদহ ভূমি অধিগ্রহণ দপ্তরের তৎকালীন অফিস সহকারী কামরুজ্জামান জেলা শহরের কাঞ্চননগর গ্রামের হাজেরা খাতুন ও রজব আলীর সাথে যোগসাজশে জাল দলিল তৈরি করে এ সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জমির প্রকৃত মালিক ভুক্তভোগী শৈলকুপা উপজেলার ২ নং মির্জাপুর ইউনিয়নের রানীনগর গ্রামের বাহারুল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা খাতুন জানান, তিনি ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে জমি বাবদ পাওনা টাকা পাওয়ার জন্য ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ ব্যাপারে ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা একটি নোটিশ প্রদান করেন। এ নোটিশে উল্লেখ করা হয়- জেলা প্রশাসক রাজস্বের দপ্তরে অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আজ পর্যন্ত এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। জমির মূল্য পরিশোধের আগে হাসিনা বাদী হয়ে সাবজজ আদালতে দেওয়ানি ৫০/২০০০ নং একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার রায়ও তার পক্ষে আসে। অথচ ২৩ শতক জমির মূল্য সুকৌশলে জাল দলিলকারীদের নামে পরিশোধ দেখানো হয়। হাসিনা বেগম আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক রাজস্বের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- প্রকৃত রহস্য উদ্ধার করতে ব্যাপক সময়ের প্রয়োজন।

পরে ঝিনাইদহের তৎকালীন জেলা প্রশাসক খাজা আব্দুল হান্নান পৌর বাসটার্মিনালের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির বকেয়া মূল্য ৬ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য কয়েকবার ঝিনাইদহ পৌর মেয়রকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত এ টাকার দেখা পাননি ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম।

উল্লেখ্য, শেষ চিঠিতে তৎকালীন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক খাজা আব্দুল হান্নান পৌর মেয়রকে জানান, জমির প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মালিককে টাকা প্রেরণ না করলে জমি ফেরত প্রদানের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বারবার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও টাকা না দেয়ায় প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি চিঠিতে আরো উল্লেখ করেছিলেন।