মানুষ আসে মানুষ চলে যায়। ক’জনই আর তার কর্ম দিয়ে বেঁচে থাকে? মহাকালের পথে যাদের পদচিহ্ন স্পষ্ট, তাদের প্রয়োজনীয়তা ঘুরে ফিরেই উপলব্ধি করে প্রবাহমান সমাজ। এদেরই একজন সাইফুল ইসলাম পিনু। তাঁর আজ দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। আজকের এ দিনেই শুধু নয়, হররোজ মাথাভাঙ্গা পরিবার সাইফুল ইসলাম পিনুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে। তার রেখে যাওয়া আদর্শ অনুসরণ করেই ন্যায় প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে মাথাভাঙ্গা পরিবার।
দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন ১০টি বছর। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত তিনি প্রধান সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর পরও তাকে মাথাভাঙ্গা পরিবার প্রধান সম্পাদক হিসেবেই মাথার মণি করে রেখেছে। চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিক সমাজে তিনি ছিলেন অন্যতম পথিকৃত। যেখানেই অন্যায়, যেখানেই নিপীড়ন সেখানেই ছুটেছেন তিনি। নিপীড়নের প্রতিবাদ করেছেন। ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের কলম শানিত করার সাহস জুগিয়েছেন। ছাত্রজীবনে? তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ভিপি ছিলেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে পর পর দু দফা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনি অনন্য দৃষ্টান্তই শুধু স্থাপন করেননি, খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে অধিকার আদায়ে সংগঠিত হওয়ার মন্ত্র শিখিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ তার সাংগঠনিক দক্ষতাকে অকপটে স্বীকার করে। সংস্কৃতি অঙ্গনেও তার অবদান অনিস্বীকার্য। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল করতেন। তার রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিলো রাজনৈতিক অঙ্গনে, সাংবাদিকতায় তথা দৈনিক মাথাভাঙ্গায় তিনি তার ন্যূনতম প্রভাব পড়তে দেননি। তার মতো ত্যাগী, দুরদর্শী কৃতীবান নেতার মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গায় যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা কখনোই পূরণ হবার নয়।
সাইফুল ইসলাম পিনুর মৃত্যু নেই। মাথাভাঙ্গা পরিবার তাকে ফ্রেমে বাধা ছবি না করে ছায়ার মতোই পাশে রেখে কুসংস্কারমুক্ত ন্যায়-নীতির সুন্দর সমাজ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। সাইফুল ইসলাম পিনু সবসময়ই সকলকে সাথে নিয়ে, সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াই করেছেন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষের একটু ভালো থাকার অধিকার নিশ্চিত করার বীজ বপন করে গেছেন। তার প্রত্যাশা তথা স্বপ্ন পূরণই হোক আজকের অঙ্গীকার।