শেষ দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষা

মাথাভাঙ্গা মনিটর: শেষ দিনের রোমাঞ্চের হাতছানি দিয়ে পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে খুলনা টেস্ট। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে একসময় চাপে পড়লেও দিনের শেষভাগে সামলে নিয়ে ভালো অবস্থানে আছে স্বাগতিকরা। শুক্রবার প্রথম সেশনে দ্রুত রান তুলতে পারলে ম্যাচের ফল হওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ জয়ের জন্য চেষ্টা করার কথা বিবেচনায় আনতে পারছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কল্যাণে। সিরিজে তৃতীয় অর্ধশতক পাওয়া এই ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় খুলনা টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ এখন হাতে পাঁচ উইকেট রেখে জিম্বাবুয়ের চেয়ে ২৬৬ রানে এগিয়ে আছে। দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০১/৫। মাহমুদুল্লাহ ৬৩ ও শুভাগত হোম চৌধুরী ২৩ রানে ব্যাট করছেন। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারালেও শামসুর রহমানের সঙ্গে ৪৭ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৫৬ রানের দুটি জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ২ উইকেটে ১৩১ রানের দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছিলেন মুমিনুল হক। তবে এরপরই দিক হারায় স্বাগতিকরা। অনিয়মিত বোলার ম্যালকম ওয়ালারের বলে মুমিনুল, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের দ্রুত বিদায়ে অস্বস্তিতে পড়ে তারা। এর মধ্যে শেষ দুইজনকে পরপর দুই বলে ফেরান ওয়ালার। মুমিনুল ও মুশফিক উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাবভার গ্লাভসবন্দি হন আর এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সাকিব আল হাসান। রিভিউ চেয়েও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারেননি সাকিব। ১৪৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়া বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দিচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ ও শুভাগত। অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়েছেন এই দুজনে। এই রান করার পথে ম্যাচে দ্বিতীয় অর্ধশতকে পৌঁছান মাহমুদুল্লাহ। ১২৯ তার বলের ইনিংসে ৭টি চার রয়েছে। এটি তার ১১তম অর্ধশতক। ৪৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ওয়ালার জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার। এর আগে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার পর চাকাবভা শতক করলেও সাকিবের নৈপুণ্যে ৬৫ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের ৪৩৩ রানের জবাবে ৩৬৮ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বৃহস্পতিবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে ৩৩১ রান নিয়ে খেলা শুরু করে জিম্বাবুয়ে। এদিন মাত্র ৩৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় অতিথিরা। সাকিব ও রুবেল হোসেনের আঁটোসাটো বোলিংয়ে সহজে রান পাচ্ছিলেন না আগের দিন অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে ১৪২ রানের জুটি গড়া মাসাকাদজা ও চাকাবভা। সুফল পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষ করতে হয়নি স্বাগতিকদের। সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে মাসাকাদজার বিদায়ে ভাঙে ১৪৭ রানের জুটি। সেই ওভারেই নিজের পঞ্চম উইকেট পেয়ে যেতে পারতেন আগের সাকিব। ফাইন লেগে ওয়ালারের সহজ ক্যাচ শাহাদাত হোসেন ছেড়ে দেয়ায় তা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয়বারের মতো একই টেস্টে শতক ও পাঁচ নিতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি সাকিবকে। ওয়ালারকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে নিজের পঞ্চম উইকেট নেন তিনি। টানা দুই টেস্টে পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। এরপর জোড়া আঘাতে টেন্ডাই চাটারা ও নাটসাই মুশাংওয়েকে ফিরিয়ে দেন রুবেল। চাটারাকে ফিরতে ক্যাচে ফেরানোর পর মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করেন মুশাংওয়েকে। দশম উইকেটে টিনাশে পানিয়াঙ্গারাকে নিয়ে নিজের প্রথম টেস্ট শতকে পৌঁছান চাকাবভা। শতকে পৌঁছে তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে তার বিদায়ে শেষ হয় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ১০১ রান করা চাকাবভার ২২৬ বলের ইনিংসটি গড়া ১৩টি চারে। ৮০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার সাকিব। এনিয়ে টেস্টে ১৩বার পাঁচ উইকেট নিলেন। দ্বিতীয়বারের মতো একই টেস্টে শতক ও পাঁচ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন তিনি।

Leave a comment