আলমডাঙ্গা ব্যুরো: প্রতারণার শোধ তুলতে পাল্টা প্রতারণার ফাঁদ পেতে প্রতারক দম্পতিকে আটক করেছে আলমডাঙ্গার বেলগাছির প্রতারিত এক যুবক। পরে আপস-মীমাংসা করে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছে প্রতারক দম্পতি। আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি গ্রামের মৃত মানোয়ার হোসেনের ছেলে বকুল হোসেন গত প্রায় ৪ মাস পূর্বে রাজবাড়ির দৌলতপুর উপজেলার সংগ্রামপুর গ্রামের খালেক মালিতার ছেলে জামিরুল ইসলামের (২৪) সাথে আরিচাঘাটে পরিচয় হয়। জামিরুলের ছল-চাতুরিতে পড়ে বকুল তাকে বিশ্বাস করে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে জামিরুল জানায়, তার পরিচিত এক পাগল রয়েছে। তার নিকট ৫০ রিয়ালের ১২০০টি নোট আছে। ১ লাখ টাকা দিলে পুরো রিয়াল দুজন ভাঙিয়ে নিতে পারবে। পরীক্ষা করে দেখতে বকুলকে ১টি ৫০ রিয়ালের নোট দিলে সে আলমডাঙ্গায় এনে সঠিকত্ব যাচাই করে এবং জানতে পারে ১ রিয়াল সমান বাংলাদেশের ২৬ টাকা পাওয়া যাবে। এ প্রলোভনে পড়ে কয়েক দিন ধরে বকুল ১ লাখ টাকা জোগাড় করে নিয়ে জামিরুলের কথামতো তাকে নিয়ে পাগলের খোঁজে ঈশ্বরদী যায়। সেখানে যাওয়ার পর বকুলকে বসিয়ে রেখে জামিরুল পূর্ব থেকে সেখানে অবস্থান করা কয়েকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে উধাও হয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা আর ফিরে না এলে বকুল জামিরুলের মোবাইলফোনে ফোন দিলে দেখে তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে সে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে তার ভাইদের বিষয়টি জানায়। তারা কৌশলে জামিরুলের স্ত্রী রশিনার নম্বর জোগাড় করে। রশিনার ফোনে রিং দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পাতলে সে ফাঁদে ধরা দেয় রুশিনা। স্বামীর কথামতো রুশিনা নিজেকে অবিবাহিত এবং স্বামী জামিরুল তার দুলাভাই জানিয়ে মোবাইলে প্রেমালাপের মাধ্যমে সৌদি রিয়ালের পুরানো গল্প শুনিয়ে প্রতারিত বকুলের ভাইকেও ফাঁদে ফেলতে চেষ্টা করে। বকুল ও তার ভাইয়েরা এটাকে পালটা টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। তারা প্রতারক দম্পতিকে ধরতে ফাঁদ পাতে। ১ লাখ টাকা দিয়ে রিয়াল নেবে জানিয়ে রুশিনাকে দেখা করতে বলে। কথা অনুযায়ী তারা পোড়াদহ স্টেশনে আসবে জানায়। এদিকে আগে থেকেই সেখানে লোকজন নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে বকুল। স্টেশনে এসে পৌঁছুলে কথা বলার এক পর্যায়ে জামিরুল ও তার স্ত্রীকে লোকজন পাকড়াও করে। পরে ফাঁড়ি পুলিশের কাছে প্রতারণা করার বিষয়টি স্বীকার করে জামিরুল। পরে পুলিশ টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে পুলিশ পোড়াদহের ঠাণ্ডু নামের এক ব্যবসায়ীর জিম্মায় দেয় তাদের। সেখান প্রথম দিন অতিবাহিত হলেও টাকা না পেয়ে বকুল গতপরশু তাদের বেলগাছি নিয়ে আসে। ৩ দিন থাকার পর গত সোমবার সন্ধ্যায় প্রতারক দম্পতির গ্রামের লোকজন বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামের নিকট গিয়ে ৩০ হাজার টাকা বিনিময়ে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে তাদের মুক্ত করে নিয়ে যায়।