সালিসে আদমব্যাপারী চেক দিলেও মিলছে না টাকা

আফ্রিকায় ভালো চাকরির প্রলোভনে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

 

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: বেকারত্বর অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে বুকভরা আশা নিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে বিদেশ পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন যুবক আলমগীর হোসেন। আফ্রিকার তানজিনা শহরে পাড়ি দিলে ভাগ্যের চাকা বদলে যাবে এ আশ্বাসে বিশ্বাস পেয়ে সহায় সম্পদ বিক্রি করে প্রতারকচক্রের হাতে তুলে দেন ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রতারক আদমব্যাপারী টাকা হাতিয়ে নিয়ে হাতে ধরিয়ে দেয় ভুয়া পাসপোর্ট। বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে বিমানবন্দরে গিয়ে কর্তৃপক্ষ ভুয়া পাসপোর্ট শনাক্ত করেছে। চোখের পানি আর বুকভরা বেদনা নিয়ে ফিরতে হয়েছে বাড়ি।

স্থানীয়রা এসব তথ্য দিয়ে বলেছে, সহায় সম্পদ বিক্রি করে সর্বস্ব হারিয়ে পিতা-পুত্র টাকা উদ্ধারের আশায় সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সালিসের আয়োজন করেন। সালিসে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেকও পান। অভিযুক্ত আদমব্যাপারী চেক দিয়ে পার পেলেও চেকগ্রহীতা টাকা না পেয়ে ফের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। আবারও গ্রাম্য সালিসের জন্য ঘুরতে শুরু করেছেন।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন (২৪)। তিনি বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে বিদেশ পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন দেখেন। জীবননগর আন্দুলবাড়িয়া পোকামারীপাড়ার শাহাজান মাঝির ছেলে প্রতারক আদমব্যাপারী আমিনুল ইসলামের প্রলোভনে পড়েন। আফ্রিকার তানজিনা শহরে গেলে ভাগ্যের চাকা বদলে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ অভিযোগ তুলে হতদরিদ্র কৃষক ইমান আলী বলেছেন, মাসের পর মাস ঘোরানোর পর হাতে ধরিয়ে দেয় ভুয়া পাসপোর্ট। ২০১২ সালের ১৫ ফ্রেরুযারি বিমানবন্দরে গিয়ে কর্তৃপক্ষ ভুয়া পাসপোর্ট শনাক্ত করে বিমানবন্দর এলাকা থেকে বের করে দেয়। গ্রাম্য মাতবর হাকিম, হজরত, চাঁদ আলী মাস্টার, হাবু মোল্লা, আহম্মদ, রহমান, গিয়াস উদ্দিনের উপস্থিতিতে সালিসসভায় প্রতারক আমিনুল স্বীকার ও অঙ্গীকার করে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আন্দুলবাড়িয়া শাখার নিজ নামীয় হিসাব নম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন। প্রতারক আদমব্যাপারী আমিনুল ইসলাম পরদিন শাখা ব্যবস্থাপকের নিকট চেকটি হারিয়ে গিয়েছে মর্মে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত বৃহস্পতিবার ব্যাংক শাখায় গিয়ে শাখা ব্যবস্থাপকের নিকট গিয়ে চেক ডিজঅনারের সার্টিফিকেট নিতে গেলে ঘটে বিপত্তি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছে, গ্রাহকের চেক হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগপত্র পেয়ে চেকটি আটক করা হয়েছে। পরে ঘটনা তদন্ত করে দেখা গেছে গ্রাহকের অভিযোগটি সত্য নয়। আপস-মীমাংসার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। মীমাংসা না হলে গ্রাহকের বিরুদ্ধে প্রতারণা করার অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হতদরিদ্র কৃষক আম-ছালা হারিয়ে রোগেশোকে নানা টেনশন পেরেশনে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

সূত্র জানায়, ফের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের চাপে পড়ে ৩ মাস সময় নিয়ে চেক দিয়েছে প্রতারক আমিনুল। অন্য একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে চেকটি। এ সময়ের মধ্যে প্রতারক আদমব্যাপারী আমিনুল বিদেশ পাড়ি দেয়ার সকল প্রস্তুতি নেয়ার কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।