সারাদেশে স্মরণকালের ভায়াবহ বিদ্যুত বিপর্যয় : অনিশ্চয়তায় কাটলো দীর্ঘসময়

ভারত থেকে নেয়া বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্র কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সঞ্চালন লাইন বসে যাওয়ায় বিপত্তি শুরু

 

স্টাফ রিপোর্টার: গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় একসাথে বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়ে সারাদেশ। দিনভর অপেক্ষার পর সন্ধ্যায় কিছু এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ শুরু হলেও পুনরায় বিপর্যয় নেমে আসে। অন্ধকারে তলিয়ে যায় পুরো দেশ। ভূতুড়ে পরিবেশ ফুটে ওঠে ঢাকার রাজপথ। থুবড়ে পড়ে কল-কারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। দীর্ঘসময় ধরে বন্ধ থাকে গুরুত্বপূর্ণ সব সেবা। ৫ টাকার মোমবাতি সন্ধ্যায় ১০ টাকায়ও পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। নগরজীবনে দেখা দেয় পানি ও গ্যাসের সঙ্কট। হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতে দেখা যায় ভূতুড়ে পরিবেশ। সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় ও রাত ৯টার দিকে ঝিনাইদহে, সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহ চালু হয়। এর কিছুক্ষণ আগে রাজধানীতে জ্বলে বিজলি বাতি। ঘুরতে শুরু করে কালকারখানার চাকা। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও উতপাদনের তুলনায় ঘাটতি বেশি থাকায় কিছু কিছু এলাকায় লোডশেডিং ও রেশনিং করা হয়।

স্মরণকালের নজিরবিহীন বিদ্যুত বিপর্যয়ের পেছনে ভারত থেকে আনা  বিদ্যুতের লাইন বসে যাওয়ার কথা জানিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই লাইনে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুত বিভাগ। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় প্রথম দফায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অবস্থিত সঞ্চালন লাইন বসে যাওয়ায় বিপর্যয়ের শুরু। এরপর একে একে সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সব বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুত ব্যবস্থা সচলের কথা বললেও বিকালে আবারও জাতীয় গ্রিডে ট্রিপ করায় বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়ে সারাদেশ। এদিকে সঞ্চালন লাইন সচল করার চেষ্টা করা হলেও রাত ১০টায় কিছু এলাকা ছাড়া সারাদেশই বিদ্যুতবিহীন ছিলো। জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়ায় রাজধানীর অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বঙ্গভবন, গণভবনেও বিদ্যুত ছিলো না। এ সব স্থাপনায় বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। ভারত থেকে আনা গ্রিডে সমস্যার কারণে ভয়াবহ এ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কোনো সমস্যার কারণে এ ঘটনা ঘটেনি। লাইনে ট্রিপ করা স্বাভাবিক বিষয়। এদিকে দিনভর বিদ্যুত না থাকায় মোমবাতি, ডিজেল ও কেরোসিন জ্বালিয়ে অনেকে নিত্যদিনের কাজ করেছেন। বিদ্যুত না থাকায় টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবারও মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। রাতে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, আমরা দ্রুত রিকভারি করতে গিয়েছিলাম। ৭০০ পর্যন্ত রিকভার করেছিলামও। এর মধ্যেই গ্রিড আবার ফেল করে। দ্রুত এগোনোয় সমস্যা হয়েছে। এখন আমরা ধীরে এগোচ্ছি। ঢাকাতে আমরা বন্ধ রেখেছি। আমরা বাইরের সাইড থেকে চালু করে করে আসছি। এখন আর মিস করা যাবে না। বিদ্যুত সরবরাহ দিতে সময় লাগার কারণে দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুত সচিব মনোয়ার হোসেন।

এদিকে পিজিসিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণ নিরূপণ, দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুত বিভ্রাটের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী ৩  কার্যদিবসের মধ্যে সচিব, বিদ্যুত বিভাগ, বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পিডিবি

সূত্র জানায়, গতকাল সারাদেশে ৬৬০০ মেগাওয়াট চাহিদা থাকলেও বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। এদিকে বিদ্যুত বিপর্যয়ের কারণে গতকাল সন্ধ্যা থেকে দোকানে দোকানে মোমবাতি ও কেরোসিন কিনতে মানুষের ভিড় দেখা যায়। পাড়া-মহল্লার অনেক দোকানে শেষতক মোমবাতিও পাওয়া যায়নি। বিদ্যুত না থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে জ্বালানি সঙ্কটের কারণে।

এদিকে একটি সাবস্টেশনের কারণে পুরো দেশের বিদ্যুত বিপর্যয়ের ঘটনায় পেছনে নিম্নমানের যন্ত্রপাতিকে দায়ী করেছেন পাউয়ার সেলের মহাপরিচালক বিডি রহমতুল্লাহ। গতকাল তিনি বলেন, ভারত থেকে পর্যাপ্ত ভোল্টেজ না পাওয়া জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে না। সার্কিট ব্রেকারের মান ঠিক থাকলে একটি সাব-স্টেশন বিকল হলেও বাকি বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো সচল থাকার কথা। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে জাতীয় গ্রিড ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে। পাউয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল-বেরুনি জানান, ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের সরবরাহ হঠাত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ন্যাশনাল গ্রিড অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে আশুগঞ্জের ৬টি কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে দেশের সবকটি বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। বিকাল ৫টা নাগাদ বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিলেও রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানির কাজে নিয়োজিত ৫০০ মেগাওয়াট হাইভোল্টেজ ব্যাক টু ব্যাক ভেড়ামারাস্থ সাব-স্টেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, সকাল থেকেই স্বাভাবিক অবস্থায় ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানি চলছিলো। কিন্তু হঠাত করেই ১১টা ২৭ মিনিট ২৮ সেকেন্ডে ভেড়ামারা সাব স্টেশনে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় লাইন বিকল হয়ে পড়ে। সারাদেশের সব বিদ্যুত কেন্দ্রও একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জাতীয় গ্রিড লাইন ফেল করে। বারবার চেষ্টা করা করেও জাতীয় গ্রিডে সংযোগ স্থাপন করতে পারিনি। তবে একটি সূত্র জানায়, ভারতের বহরমপুর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুত আমদানি করা হয়। ওই স্টেশন থেকে বাংলাদেশে ২৩০ কিলোভোল্টে বাংলাদেশ বিদ্যুত গ্রহণ করে। কিন্তু আজ উপযুক্ত ভোল্টেজ না পাওয়ায়  ভেড়ামারা সাব-স্টেশনের লাইন ট্রিপ করে। ফলে জাতীয় গ্রিডে এর প্রভাব পড়ে।

বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের সরকারি খাত থেকে আমদানি করা বিদ্যুত দেশের জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন শুরু হয়। কুষ্টিয়ার ভেড়মারা গ্রিড উপকেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে আসে। পরে দু দেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুত আমদানি ৫০০ মেগাওয়াটে পৌঁছায়। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বিদ্যুত আমদানির ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়। পরে এ নিয়ে দু দেশের মধ্যে ২৫ বছরের চুক্তি হয়। এই আমদানি চুক্তি কার্যকর করতে বাংলাদেশের ভেড়ামারা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরে সুইচ স্টেশন স্থাপন করা হয়। একইসাথে দু দেশের জাতীয় গ্রিড লাইনের সংযোগের জন্য বসানো হয় ৯৮ কি.মি. সঞ্চালন লাইন। ওই বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনে সমস্যা দেখা দেয়ায় সারাদেশ বিদ্যুতবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে দেশের পাউয়ার স্টেশনগুলো একসাথে বন্ধ হয়ে যায়। পিডিবির পরিচালক (জনসংযোগ) সাইফুল ইসলাম জানান, বিদ্যুত চালু করতে গেলে একটা একটা করে স্টেশন চালু করতে হয়। বিকালের মধ্যেই কাপ্তাই বিদ্যুতকেন্দ্র চালু হয়ে যায়। এরপর সিলেট ও ময়মনসিংহ চালু হয়। এদিকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে আশুগঞ্জ বিদ্যুতকেন্দ্রের নয়টি ইউনিটের উৎপাদন।

গ্রিড লাইনে ক্রটির কারণে শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের সবগুলো ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে ১ হাজার ৭ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আশুগঞ্জের সরকারি ৯টি ও বেসরকারি ৪টিসহ মোট ১৩টি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের পরিচালক কারিগরি প্রকৌশলী সাজ্জাদুর রহমান জানান, গ্রিড লাইনের ত্রুটির কারণে আশুগঞ্জের সবগুলো ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কোথায় ত্রুটি তা বুঝা যায়নি। বিকল্প ব্যবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। বন্ধ ইউনিটগুলো প্রতিটি ৬৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন  ১নং, ২নং ইউনিট, প্রতিটি ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩, ৪ ও ৫নং ইউনিট, প্রতিটি ৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন জিটি-১, জিটি-২ ইউনিট, ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এসটি ইউনিট, ৫০ মেগাওয়াটের গ্যাস টারবাইন, বেসরকারি ৫৫ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড পাওয়ার, ৫০ মেগাওয়াটের পিসিশন অ্যানার্জি, ৫৫ মেগাওয়াটের মিডলেন্ড পাউয়ার লি., ৮০ মেগাওয়াটের এগ্রিকো পাউয়ারের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

জাতীয় গ্রিড লাইনে বিদ্যুত বিপর্যয়ের ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ৬টি জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থায় ময়মনসিংহ শহরে আংশিকভাবে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। ময়মনসিংহ কেওয়াটখালী পাউয়ার গ্রিডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক কুমার নন্দী জানান, শনিবার দুপুর ১২টার পর জাতীয় গ্রিড লাইনে বিদ্যুত বিপর্যয় ঘটে। বিদ্যুত সরবরাহ বিপর্য়য় ঘটনার ৪০ মিনিট পর শম্ভুগঞ্জের রুরাল পাওয়ার কোম্পানি থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় ময়মনসিংহ শহরে আংশিকভাবে বিদ্যুত সরবরাহ চালু করা হয়। সারা দেশে বিদ্যুত বিপর্যয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। শনিবার দুপুরে সারা দেশ বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে রামপুরায় এক প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সারাদেশে বিদ্যুত বিপর্যয়ের জন্য আমরা দুঃখিত। একটা সিস্টেমে ট্রিপ করে যাওয়াতে সেই চাপ সহ্য করতে পারেনি বাকিগুলো। ফলে বাকিগুলো ট্রিপ করে। এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এ রকমটা কখনও কখনও হতেই পারে। এটা অস্বাভাবিক নয়। নিউইয়র্কেও কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুত ছিলো না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত সঞ্চালনের কাজ করা হচ্ছে। জরুরি অবস্থা মোকাবেলা করার মতো আমাদের প্রযুক্তি আছে।

ভারতের বহরমপুর ও বাংলাদেশের ভেড়ামারার মধ্যে চালু বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের বাংলাদেশের দিকে সাব-স্টেশনে লাইন বসে যাওয়ার জন্যই বিপর্যয় ঘটেছে। এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের সাব-স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের সোথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ভারতের দিকে বিদ্যুত সরবরাহে কোনো ত্রুটি ঘটেনি। ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুত পাঠানো হয় দুটি লাইনে। এর মধ্যে একটি লাইন এদিন সচল থাকলেও অন্য লাইনটিতে বাংলাদেশের দিকে বসে গেছে বলে তাদের কাছে খবর এসেছে। তবে এটা কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়। বিদ্যুত লাইনে সরবরাহে কোনো ত্রুটি হলেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে লাইন বসে (ট্রিপ) যায়। এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থারই অঙ্গ বলে জানানো হয়েছে।

রাজধানীতে পানি সঙ্কট: দেশের বিদ্যুত বিপর্যয়ের কারণে রাজধানীতে পানি সঙ্কট দেখা দেয় বিকাল থেকে। লালবাগের স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, দীর্ঘ সময় বিদ্যুত না থাকায় সকাল থেকেই অনেকের বাসায় পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাসা-বাড়িতে রিজার্ভ ট্যাঙ্কি না থাকায় হাউজ থেকেও পানি সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে রান্না করতে তাদের ব্যাপক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। এদিকে, পুরান ঢাকায় পানি সরবরাহকারী ওয়াসার পাম্পগুলো বন্ধ দেখা গেছে। এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার নিজস্ব পাম্প থেকে পানি সংগ্রহ করতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আজিমপুর কলোনি, ঢাকেশ্বরী, ইসলামবাগের চান্দিঘাট এলাকার ওয়াসার পাম্প বন্ধ দেখা গেছে। এসব পাম্পের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্য দিন সব মিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা পাম্প চালু থাকে, কিন্তু গতকাল সাড়ে ৯টা থেকেই বন্ধ। পানির সমস্যা সমাধানে স্থানীয় ওয়াসার পদক্ষেপ জানতে যোগাযোগ করলে মডস জোন-২’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমদাদুল হক কথা বলতে রাজি হননি। যদিও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বিকল্প ব্যবস্থায় তাদের পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।