বাড়ির দরজা ঝাঁকিয়ে সাড়া না পেয়ে বোমা নিক্ষেপ : প্রবাসীর পিতা নিহত

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার ছোটপুটিমারীতে সপ্তা না ঘুরতেই একদল দুর্বৃত্তের ফের হানা

 

মুন্সিগঞ্জ/ঘোলদাড়ি প্রতিনিধি: দুর্বৃত্তের নিক্ষেপ করা বোমাঘাতে আলমডাঙ্গার ছোটপুটিমারী গ্রামের মুসারদ্দি (৬৫) খুন হয়েছেন। গতরাত সোয়া ১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার ওপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে রাত ৩টার দিকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

চাঁদা চেয়ে না পেয়ে বোমা মেরে খুন? নাকি ডাকাতি? স্থানীয়রা বলেছেন, একই গ্রামের সৌদি প্রবাসীর পিতা আজিজুল খন্দকারের বাড়িতে ডাকাতির সপ্তা পার হতে না হতে মালয়েশিয়া প্রবাসীর পিতা মুসারদ্দিকে বোমা মেরে খুন করেছে ডাকাতদল। পুলিশ অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। নিহত মুসারদ্দির মৃতদেহ আজ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হতে পারে।

বোমাঘাতে নিহত মুসারদ্দি ওরফে মুসার উদ্দীনের দু ছেলে ওলিউদ্দিন ও কফিল উদ্দিন মালয়েশিয়া প্রবাসী। তিনিসহ তার অপর ছেলে আপিল উদ্দীন নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। মুসারদ্দি ছিলেন ঘরের বারান্দায়। রাত সোয়া ১টার দিকে বাড়ির গেট ধাক্কাধাক্কির পরও সাড়া না পেয়ে বোমা ছুড়ে মারে। ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা মুসারদ্দির মাথায় লাগে। মাথার একাংশ ক্ষতবিক্ষত হয়। রক্তক্ষরণে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। মাথার মগজ বেরিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকেই তিনি সংজ্ঞাহীন ছিলেন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে মুন্সিগঞ্জের প্রতীজ্ঞা নার্সিং হোমে নেয়া হয়। সেখান থেকে সোয়া ২টার দিকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সউদ কবীর জন প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। মুসারদ্দির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে মন্তব্য করে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। মুসারদ্দিকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের ছোটপুটিমারী গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে মুসারদ্দি ওরফে মুসার উদ্দীন অন্যান্য রাতের মতো গতরাতেও নিজ বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত সোয়া ১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত হানা দিয়ে বাড়ির মেন গেট ধাক্কাধাক্কি করে খোলার চেষ্টা করে। ডাকাডাকিও করে। সাড়া না পেয়ে একটি বোমা ছুড়ে মারে তারা। বোমাটি মুসারদ্দির মাথার পাশে পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। বোমাঘাতে মুসারদ্দির মাথার একাংশ রক্তাক্ত জখম হয়। মাথার মগজও বেরিয়ে পড়ে।

বোমা নিক্ষেপকারীরা ডাকাতি করতে এসে বাড়ি প্রবেশ করতে না পেরে বোমা নিক্ষেপ করেছে নাকি পূর্বে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে বোমা মেরেছে? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন স্থানীয়রা। তবে গ্রামের অধিকাংশ ব্যক্তিরই ধারণা, সপ্তাখানেক আগে প্রতিবেশী সৌদি প্রবাসীর পিতা আজিজুল খন্দকারের বাড়িতে ডাকাতি হয়। এ ঘটনার পরও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় ডাকাতদল সাহসী হয়ে আবারও একই গ্রামে ডাকাতির জন্যই হানা দিয়েছে। বাড়িতে ঢুকতে না পেরে প্রতিরোধের আশঙ্কায় বোমা নিক্ষেপ করেছে ডাকাতদল। এ ঘটনার পর গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।