স্টাফ রিপোর্টার: আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকারম মসজিদের উত্তর গেটে জানাজা শেষে মানবতা বিরোধী অপরাধে ৯০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ও জামায়াত ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের লাশ মগবাজারে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। জানাজায় ইমামতি করবেন তার ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমি। এর আগে, লাশ কোথায় ও কখন দাফন করা হবে এ ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তার পরিবার। পারিবারিক সূত্র জানায়, গোলাম আযমের ছয় ছেলের মধ্যে পাঁচ ছেলে সপরিবারের বিদেশে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে ছোট ছেলে আব্দুল্লাহিল সালমান আল আযমি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তার দেশে ফেরার সম্ভবনা রয়েছে। তার দেশে ফেরা ও না ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে দাফনের স্থান ও সময়কাল জানানো হবে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) গোলাম হায়দার জানান, কারাবিধি অনুযায়ী একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এরপর রাত ৩টার দিকে লাশ পাঠানে হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আ.ফ.ম. শফিউজ্জামান খায়েরকে প্রধান করে দু সদস্যের একটি ময়নাতদন্তকারী বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের অপর সদস্য হলেন প্রভাষক ডা. প্রদীপ কুমার বিশ্বাস। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ময়না তদন্তে হিস্টপ্যাথলজি রিপোর্টের জন্য লাশের হার্টের নমুনা ও রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ভিসেরা আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের পক্ষে গোলাম আযমের চতুর্থ ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমি লাশ গ্রহণ করেন।
পরিবারের কাছে হস্তান্তর শেষে লাশ একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় মগবাজার ওয়ারলেসগেট এলাকার কাজী অফিস গলির বাড়িতে। সেখানে গোসল করানোর পর পরিবার ও স্বজনেরা তার লাশ দেখেন। পরে লাশ আটতলা বাড়ির সামনে রাখা হয়। সেখানে জামায়াত ইসলামীর নেতারা লাশ দেখেন। পরে তার লাশ দেখার জন্য জামায়াত ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা সেখানে ভিড় করেন। লাশ দেখতে আসা মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ওয়ারলেস গেট থেকে তার বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে আমান আযমি জানিয়েছিলেন, তার বাবার শেষ ইচ্ছায় হলো জানাজায় জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী অথবা নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ইমামতি করুন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম শুক্রবার ১৪ দলের বৈঠক শেষে জানান, এর সুযোগ নেই। নিজামী ও সাঈদী কেউ গোলাম আযমের আত্মীয় নন, তাদের প্যারোলে মুক্তি নিয়ে জানাজায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।
গোলাম আযমের আইনজীবী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিজামী অথবা সাঈদীকে দিয়ে জানাজায় ইমামতি করানোর ইচ্ছা থেকে সরে এসেছে গোলাম আযমের পরিবার। তিনি বলেন, তাদের প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করা হবে না। পরিবারের কোনো সদস্য ইমামতি করবেন। আমান আযমি গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি নিজেই বাবার জানাজায় ইমামতি করবেন।