আলমডাঙ্গা ব্যুরো: নাটোরের বড়াইগ্রাম ট্র্যাজেডিতে নিহত আলমডাঙ্গা পাইকপাড়ার সন্তান গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমানের (৬২) লাশ গতকাল পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার মাস্টারের বড় ছেলে হাফিজুর রহমান নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার দিন সোমবার তিনি নাটোর জেলা প্রশাসকের মিটিঙে যোগদান শেষে বাসযোগে গুরুদাসপুরে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে দু বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনিসহ ঘটনাস্থলেই ৩৩ জন নিহত হন। গতকাল দুপুরে তার লাশ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ জোহর পারিবারিক গোরস্তানে নিহতের লাশ দাফন করা হয়।
তিন ভাইও দু বোনের মধ্যে হাফিজুর রহমান ছিলেন সবার বড়। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর তিনি ১৯৮২ সালে এলজিইডি-তে প্রকৌশলি হিসেবে যোগদান করেন। মরহুমের একমাত্র সন্তান আবির হোসেন এখন ছাত্র, লেখাপড়া শেষ হয়নি। বর্তমানে আত্মীয়স্বজনসহ গ্রামবাসী তার শোকে বিহ্বল।
উল্লেখ্য, নাটোরের বড়াইগ্রামে দু বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে দুই শিশু ও দু নারীসহ ৩৪ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। উপজেলায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে গত সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটা সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় গতকাল বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয় জনতা। এতে মহাসড়কের দু পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে। নিহতদের মধ্যে গুরুদাসপুরের একই পরিবারের সাত সদস্য রয়েছেন। দুর্ঘটনায় দু বাসের চালকই নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বনপাড়া মহাসড়ক থানার ওসি ফুয়াদ হাসান জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মহাসড়কের রেজির মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাস দুটির মধ্যে কেয়া পরিবহনের বাসটি ঢাকা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলো এবং রেজি পরিবহনের বাসটি রাজশাহী থেকে সিরাজগঞ্জগামী ছিলো। বড়াইগ্রাম থানার এসআই সুকোমল বলেন, তারা অন্তত ৩৪টি লাশ হাইওয়ে থানায় পাঠিয়েছেন। আহত যাত্রীদের বনপাড়া আমেনা হাসপাতাল, পাটোয়ারি হাসপাতাল ও নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সি শাহাবুদ্দিন জানান, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে হতাহাতের ঘটনায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয় জনতা।এতে মহাসড়কের দুইপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-রাজশাহী হাইওয়ের রাজ্জাকের মোড়ে বাসদুটি দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে। নাটোর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আখতার হোসেন জানান, মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে বনপাড়ায় হাইওয়ে থানায় ও নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহগুলো উদ্ধার করে বলে তিনি জানান। নিহতদের বেশিরভাগ কেয়া পরিবহনের যাত্রী বলে জানান উদ্ধারকারীরা। দুটি গাড়িই অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই অবস্থায় ছিলো বলেই জানান আখতার হোসেন। ঘটনাস্থল থেকে স্বপন দাস এক ব্যক্তি জানান, তিনি একজন আহত যাত্রীর সংগে কথা বলেন। ওই যাত্রী বলেছেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্ঘটনাটি ঘটে