পিটুনির শিকার দু শ্রমিককে পুলিশ আটক করলেও মামলা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মুক্তি
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি খামার থেকে বস্তার বান্ডিল বাধা হালপাতি চুরি করে সরানোর সময় বাধার মুখে পিটুনির শিকার হয়েছে এক শ্রমিক। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আহত হয়েছে আরো এক শ্রমিক। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গার বিএডিসি খামারের অদূরবর্তী পুরাতন ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডে। আহত শ্রমিকদের পুলিশ আটক করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানা কাস্টডিতে নিলেও শেষ পর্যন্ত মামলা না হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি খামার থেকে মাঝে মাঝেই ধানসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়। বস্তার বান্ডিল বাধা লোহার পাতি শ্রমিকদের যে যেমন পারে সে তেমন নিয়ে বিক্রি করে। শ্রমিকদের সর্দ্দার মোমিন ভাগ পান। পুরাতন ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডের নিকটস্থ ভাংড়ির দোকানে মাঝে মাঝেই কয়েক মণ করে পাতি বিক্রি পূর্বে গোপনে হলেও এখন তা প্রকাশ্যেই চলে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনুমানিক এক মণ পাতি নিয়ে বিপ্লব নামের এক শ্রমিক ওই দোকানের দিকে রওনা হয়। কয়েকজন শ্রমিক বাধা দেয়। স্থানীয়রাও সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষ নেয়। বিল্লাল উগ্র আচরণ শুরু করলে তা মারপিট করতে থাকে অন্য শ্রমিকসহ স্থানীয়দের কয়েকজন। এ সময় বিল্লাল জানায়, লেবার সর্দ্দার মোমিনের কথা মতোই ওই পাতি নিয়ে বিক্রির জন্য যাচ্ছিলো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। বিল্লালকে আটক করে। এ সময় বিল্লালের পক্ষে নাজমুলসহ কয়েকজন রুখে দাঁড়ায়। পুলিশের উপস্থিতিতেই দু দল শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। নাজমুল পড়ে গেলে তাকেও পিটুনির শিকার হতে হয়। পুলিশ নাজমুল ও বিল্লাল হোসেনকে পিকআপে তুলে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়। পরে নেয়া হয় থানা কাস্টডিতে। দিনভর অপেক্ষার পরও কেউ মামলা করেনি। সূত্র বলেছে, পুলিশের সাথে বিএডিসির কর্তাদের কয়েকজনের গোপন বৈঠকের পর আটক দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে উদ্ধারকৃত হালপাতি পুলিশ হেফাজতেই রাখা হয়েছে।
বিল্লাল চুয়াডাঙ্গা নূরনগর-কলোনির খাজা উদ্দীনের ছেলে। নাজমুল একইপাড়ার চাঁদ আলীর ছেলে। এরা দীর্ঘদিন ধরে খামারে লেবার হিসেবে কাজ করে আসছে। লেবার সর্দ্দার মোমিনের আস্থাভাজন হওয়ায় বিল্লালকে দিয়ে বস্তার বান্ডিল বাধা লোহার পাতি বিক্রি করা হচ্ছিলো। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল এরকমই স্বীকারোক্তি দেয়। তাকে ছেড়ে দেয়ার পর স্থানীয়দের অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়তে পারে শঙ্কায় মামলা হয়নি। বিষয়টি তড়িঘড়ি করে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে।