ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লুটপাট ও মিথ্যাচারের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মীর মো. মোখলেছুর রহমানকে শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনাটিকে সাজানো মিথ্যাচার বলে দাবি করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রহমান জানান, গত ১৫ অক্টোবর স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মীর মো. মোখলেছুর রহমানকে শারীরিক লাঞ্ছনার যে অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়। তিনি বলেন, ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট থেকে আমি বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। তার আগে এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত হাজি নায়েব আলী সভাপতি ছিলেন। নায়েব আলীর মতো সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেন মীর মোখলেছুর রহমান। সভাপতি থেকে অপসারণের আয়োজন করে লুটপাটের পথ পরিষ্কার করেন। এরপর একের পর এক ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে লুটপাটের মহোৎসব শুরু করেন। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে নিরীক্ষায় মীর মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে ৫৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৬৫ টাকা অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। ওই অর্থ তছরুপের বিষয়ে মোখলেছুর রহমানকে কারণ দর্শানো নোটীশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এরপর ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সশরীরে উপস্থিত থাকার কথা বললেও তিনি উপস্থিত থাকেননি। যে কারণে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিনি উল্লেখ করেন, বিষয়টি নিয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে কয়েক দফা চিঠি চালাচালি করা হয়। এক পর্যায়ে বোর্ডের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ মোখলেছুর রহমানকে প্রধান শিক্ষকের পদে যোগদানের জন্য অনুমতিপত্র দেয়া হয়। অথচ তিনি যোগাদান না করে কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে নামেন। এতে কমিটির সদস্যরা ক্ষুব্ধ হন এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক শরীফ উদ্দীনকে প্রধান শিক্ষকের পদে দায়িত্ব দেন।
এদিকে ব্যবস্থাপনা কমিটির নিরীক্ষায় মীর মোখলেছুরের বিরুদ্ধে সর্বমোট ৬১ লাখ ২৯ হাজার ৮৩২ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাত কর্মদিবসের মধ্যে মোখলেছুর রহমানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশ পেয়ে তিনি ৩ সপ্তা সময় প্রার্থণা করেন এবং দু সপ্তার সময় পান। এ সুযোগে সভাপতিকে অপসারণের জন্য যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ে জরুরিসভা আহ্বান করা হয়। ওই সভায় উপস্থিত থেকে মোখলেছুর উল্টোপাল্টা কথা বলেন এবং কমিটিকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে অন্য শিক্ষকদের সাথে তার তর্কবিতর্ক হয়। অথচ তিনি সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলেন, তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। যা আদৌ সত্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শরীফ উদ্দীন, বিদ্যোৎসাহী সদস্য শওকত আলী, অভিভাবক সদস্য আব্দুস সাত্তার, মাসুদুর রহমান ও তাহাজ উদ্দীন, দাতা সদস্য সাইফুদ্দীন আলী ও শিক্ষক প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান।