বর্ধমানে বোমা তৈরির সময় দু জঙ্গি নিহত : তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলায় একটি ভাড়া বাড়িতে শক্তিশালী বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে দু জঙ্গি নিহত হওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে ভারত। এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমে নিহতদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে প্রচারণার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তথ্য চেয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার একটি নোট ভারবাল পাঠায় ও নিহত দু ব্যক্তি ‘বাংলাদেশি জঙ্গি’ বলে যে আখ্যা দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খয়রাগড়ায় গ্রেনেড তৈরির সময় বিস্ফোরণে শাকিল আহমেদ ও শোভন মণ্ডল নামে দু ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনায় হাসান সাহেব নামে আরেকজন আহত হয়। বিস্ফোরণের পর রিজিয়া বিবি ওরফে রুমী, আমিনা বিবি ও হাপেজ মোল্লা ওরফে হাসানকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গ্রেনেড, গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, কিছু জেহাদি বই, প্রশিক্ষণের ভিডিও, বর্ধমান জেলার মানচিত্র উদ্ধার করে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বুধবার সাংবাদিকদের এ ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ভারত সরকারের কাছে আমরা বিস্তারিত তথ্য চেয়েছি। বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো বাংলাদেশির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না কিংবা বাংলাদেশ কীভাবে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে চলমান কার্যক্রম আরো জোরদার করা যায় সে ব্যাপারে নোট ভারবাল দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, নিহত দু জঙ্গির পরিচয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জঙ্গিদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেয়া হবে না।

সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতায় বিএসএফ ও বিজিবি: বর্ধমানে গ্রেনেড তৈরির সময় বিস্ফোরণে দু জঙ্গি নিহতের ঘটনায় সাতক্ষীরা সীমান্তের বিপরীতে ভারত সীমান্তে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থা জারি করা হয়েছে। সীমান্তে কোনো প্রকার নাশকতা ও জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে বিএসএফকে। জনবল বৃদ্ধি করে কড়া নজরদারিতে রাখার পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত ভারতীয়দের সন্ধ্যার পর সাবধানে চলাচল করেতে বলা হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা সীমান্তে বিজিবির পক্ষ থেকেও জনবল বৃদ্ধি করে টহল জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সন্ধ্যার পর সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সীমান্ত পথে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, পশুর চামড়া ও মাদকপাচার রুখতে বিজিবির পক্ষ থেকে এই সর্তক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সীমান্তের বিপরীতে ভারতের সরুপনগর থানার তেঁতুলবাড়িয়া, গরজালা, গড়েরকান্দা, হাকিমপুর, তারালি, আমুদিয়া, বশিরহাটা থানার খলিসা, দুবলি, সোলপুর, পাখিমারা, কৈজুড়ি, ঘোজাডাঙ্গা, পানিতর, টাকি, হাসনাবাদসহ বিভিন্ন সীমান্তে বিএসএফ’র পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থা জারি করা হয়েছে। সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৮ ব্যাটালিয়নের অপারেশন অফিসার মেজর আহসান হাবিব জানান, তারা জেনেছেন সাতক্ষীরা সীমান্তের বিপরীতে বিএসএফ জনবল বৃদ্ধি করে টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সীমান্ত বরাবর নজরদারি বাড়িয়েছে তারা। একই সাথে বিজিবির পক্ষ থেকেও সীমান্তে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসরতদের সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, মাদক, নারী ও শিশু পাচার এবং পশুর চামড়া পাচার রোধে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এসব ব্যাপারে বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তের মানুষের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।