পৃথক দুর্ঘটনা : এক শিশুসহ নিহত ৩

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে মোটরসাইকেল বেপরোয়া

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: সড়ক দুর্ঘটনায় জীবননগরে এক বৃদ্ধা, মেহেরপুর গাংনীতে এক শিশু ও ঝিনাইদহ কোর্টচাঁপুরে এক টেলিফোন অপারেটর নিহত হয়েছেন। কোটচাঁদপুরে করিমন উল্টে আব্দুল হাই, জীবননগরের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চায়না খাতুন ও মেহেরপুরের গাংনীতে বাসের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাইম হোসেন নামের এক শিশু নিহত হয়। এছাড়া পৃথক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই উঠতি বয়সী। এরা ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ দেখতে করিমনযোগে রওনা হয়ে করিমন উল্টে আহত হয়েছেন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ সুন্দরপুরেরর ইউসুব আলীর ছেলে সাগর (১৭) ও একই গ্রামের দাউদ জোয়ার্দ্দারের ছেলে আরোজ আলী। গতকাল দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গার অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডপাড়ার হাশেম আলীর ছেলে এলেম (১৮) মোটরসাইকেল নিয়ে ঈদের পরদিন সন্ধ্যায় ঘুরতে বের হয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরকালেজের নিকট ট্রাকের ধাক্কায় আছড়ে পড়ে আহত হয়।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলার মনোহরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী রাস্তায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চায়না খাতুন (৮০) নিহত হন। স্থানীয়রা বলেছে, জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের তফেজ উদ্দিন জোয়ার্দারের স্ত্রী চায়না খাতুন মঙ্গলবার বাড়ির পার্শ্ববর্তী রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুত গতি সম্পন্ন একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে ধাক্কা দেয়ে। এতে চায়না খাতুন মারাত্মক জখম হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। তার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাইম হোসেন (৯) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শিশুটির পিতা মাহাবুব হোসেন (৩৮), মা ফেরদৌসী খাতুন (৩৫) ও বোন নিতু খাতুন (৭)। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আকুবপুর নামক স্থানে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতদের বাড়ি কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনিতে। পুলিশ বলেছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন স্ত্রী ও দু ছেলে-মেয়ে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়াগামী যাত্রীবাসী লোকাল বাস রফ রফ পরিবহনের (যার নং কক্সবাবার জ-১১-০৪০০২১) সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নাইমের মৃত্যু হয়। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাহবুব হোসেন ও তার স্ত্রী এবং মেয়েকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন স্থানীয় লোকজন। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুর্ঘটনা স্থানের পার্শ্ববর্তী খলিখাকুণ্ডি গ্রামের রাসেল আহম্মেদ জানান, দ্রুতগতির ওই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাইমের মৃত্যু হয়েছে। মোটরসাইকেলটি চুর্ণবিচুর্ণ হয়।

এদিকে ঘটনার পর বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার সড়কে বাস ফেলে পালিয়ে যায়। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও মোটরসাইকেলটি পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নিহতের মরদেহ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কোটচাঁদপুরে মঙ্গলবার সকালে আলমসাধু উল্টে একজন নিহত হয়েছে। কোটচাঁদপুর থেকে কয়েকজন যাত্রী নিয়ে একটি আলমসাধু কালীগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করে। আলমসাধুটি কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের কাছে পোঁছুলে চালকের পরণের লুঙ্গি ইঞ্জিনে জড়িয়ে গাড়িটি উল্টে যায়। ফলে আলমসাধুর নিচে চাপা পড়ে যাত্রীরা আহত হয়। এদের মধ্যে মারাত্মক আহত কোটচাঁদপুর টেলিফোন অফিসের অপারেটর আব্দুল হাইকে (৫২) কোটচাঁদপুর হাসপাতালে আনার পরই সে মারা যান।