ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন : কলেজপড়ুয়া খুনি তোতাকে খুঁজচ্ছে পুলিশ

জীবননগর উথলী সেনেরহুদায় চা দোকানে বসে তাস খেলা : বাধা দেয়ায় বিরোধের সূত্রপাত

 

স্টাফ রিপোর্টার: জীবননগর উথলী সেনেরহুদায় যুবকের ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন হয়েছেন দু সন্তানের জনক আরিফুল ইসলাম আরিফ (২৭)। গতরাত ৮টার দিকে সেনেরহুদার আলাউদ্দীনের চো দোকানে তাস খেলার সময় এ খুনের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত খুনি তোতাকে (২০) খুঁজচ্ছে পুলিশ। সে একই গ্রামের সামিরুল ইসলামের ছেলে। খুলনা পলিটেকনিক্যাল কলেজের ছাত্র। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত ছিলো।

নিহত অরিফুল ইসলাম আরিফ সেনেরহুদা পূর্বপাড়ার আজির বকশের ছেলে। পেশায় কৃষি কাজ করতেন বলে জনিয়েছেন তার নিকটজনেরা। তারা ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, আরিফুল ইসলাম আরিফ, একই গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর, আসাদ আলীর ছেলে রমজান আলী, আব্দুর রহীমের ছেলে বাদল গ্রামেরই আলাউদ্দীনের চা দোকানে বসে তাস খেলছিলো। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে রমজানের ভাতিজা তোতা সেখানে পৌঁছায়। রমজানকে তাস খেলতে বারণ করে বলে, সংসার চালাতে পারো না, অথচ এখানে বসে তাস দিয়ে জুয়া খেলছো? পুলিশে খবর দিয়ে তোমাদের ধরিয়ে দেবো। এ কথায় ক্ষুব্ধ হন রমজানসহ অন্যরা। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তোতাকে ধাক্কা দিয়ে বাড়ি যেতে বলা হয়। তোতা বাড়ি ফিরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ৮টার দিকে হাজির হয় চা দোকানের সামনে তাস খেলার আসরে। রমজানের সাথেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এক পর্যায়ে রমজানের পাশে থাকা অপর তাস খেলোয়াড় আরিফুল ছুটে যান তোতার দিকে। তোতা ধারালো অস্ত্র হেঁসো দিয়ে কোপ বসিয়ে দেয় ঘাড়ে। ধারালো অস্ত্র হৃদপিণ্ড ছুয়ে যায়। দ্রুত সরে পড়ে তোতা। রক্তাক্ত জখম আরিফকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত সোয়া ৯টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছুলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে পথিমধ্যেই মারা গেছেন আরিফ।

আরিফুল ইসলাম আরিফের মৃতদেহ গতরাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই রাখা ছিলো। আজ বৃহস্পতিবার হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে। খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাজির হন সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান। অপরদিকে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে থানার অফিসারদের দ্রুত তোতা মিয়াকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তোতাকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত ছিলো। সে ছাত্রলীগকর্মী বলে স্থানীয়দের কয়েকজন মন্তব্য করেছেন। নিহত আরিফও ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থক।

স্থানীয় কয়েকজনের বরাত দিয়ে আমাদের উথলী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দোকানে ক্যারামবোর্ড খেলা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। আড়ালে পূর্ব বিরোধ আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিহত আরিফুলের রয়েছে দু কন্যা। বড় মেয়ে মরিয়ম ওরফে মাবিয়ার বয়স ৫ বছর, আর ছোট মেয়ের বয়স কয়েক মাস। আরিফুল গ্রামেরই জালাল উদ্দীনের মেয়ে মালা খাতুনের সাথে আনুমানিক ৭ বছর আগে বিয়ে করেন। তিনি তিন ভাই এক বোনের মধ্যে একজন ছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে স্ত্রীসহ নিকটজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

Leave a comment