দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দ্বৈতনীতি

কাজ না করে বিল তুলেছেন অনেকেই : বিল পাচ্ছেন না রিপন মেম্বার

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের প্রকল্প সভাপতিদের অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের বিরুদ্ধে দ্বৈত আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, ওই ইউনিয়নের একাধিক প্রকল্পের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কাজ না করেও প্রকল্প চেয়ারম্যানরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে যোগসাজশ করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেছেন। অথচ প্রকল্পের যথাযথ কাজ করার পরও ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. আবুল কালাম আজাদ রিপনকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রকল্পের ৫০ হাজার টাকা আটকে দিয়েছেন। প্রকল্পের পরিশোধের দাবি জানিয়ে এবং দ্বৈতনীতি পরিহার করে বিল পরিশোধের জন্য ইউপি মেম্বার আবুল কালাম আজাদ ২২ জুন দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানান। লিখিত দরখাস্তে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অসহযোগিতায় ও প্রকল্প বরাদ্দ বাতিলের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিকার পাওয়ার আবেদন করেন। প্রকল্পের নাম বুইচিতলা কমিউনিটি ক্লিনিক হতে ধাবার মাঠ বুখার খাল পর্যন্ত মেরামত। একই বিষয়ে ২৪ জুন জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. আবুল কালাম আজাদ রিপন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরা বেগমকে দায়িত্ব দেন। সূত্রমতে, আজ বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরা বেগম সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।

এদিকে গতকাল বুধবার সরেজমিন বুইচিতলা গ্রামে গিয়ে বুইচিতলা কমিউনিটি ক্লিনিক হতে ধাবার মাঠ বুখারখাল পর্যন্ত মেরামত কাজ পরিদর্শন করা হয়। এ সময় গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উল্লেখিত রাস্তাটি সরকারি জায়গা হলেও দীর্ঘদিন তা স্থানীয় একটি সুবিধাভোগী মহল দখল করে রেখেছিলো। কাবিটার ওই কাজের মধ্যদিয়ে গ্রামের বুখারখাল মাঠে প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল আনা-নেয়ার জন্য কৃষকরা রাস্তাটি ব্যবহার করবেন। রাস্তার সুফল পেয়ে গ্রামের কৃষক মিকাঈল হোসেন, মকছেদ আলী, লিয়াকত আলী বিশ্বাস, খাজা মহিউদ্দিন, মজিবর রহমান, আবু সাঈদ সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এদিকে এলাকায় অনুসন্ধান করে জানা গেছে, দেড়লাখ টাকা ব্যয়ে কুড়ুলগাছি গফুরের বাড়ি হতে হযরত আলীর জমি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত, দেড়লাখ টাকা ব্যয়ে ঠাকুরপুর সিদ্দিকের বাড়ি হতে শমসেরের জমির তেমাথা পর্যন্ত এবং একলাখ টাকা ব্যয়ে চণ্ডিপুর জাহার মীরের বাড়ি হতে চারাবাগান পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পে প্রকল্প চেয়ারম্যানরা নামমাত্র কাজ করলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের সাথে যোগসাজশ থাকায় তারা শতভাগ বিল পেয়ে গেছেন। অথচ আবুল কালাম আজাদ রিপন শতভাগ কাজ করেও বকেয়া ৫০ হাজার টাকার জন্য হয়রানি হচ্ছেন। এলাকাবাসী অভিযুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার এ দ্বৈতনীতির সমালোচনা করে অবিলম্বে আবুল কালাম আজাদ রিপনের বিল পরিশোধের দাবি জানিয়েছে।