আন্দুলবাড়িয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ২০ হাজার টাকা প্রদান

 

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: আন্দুলবাড়িয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ২০ হাজার টাকা ক্ষেত ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয়া হয়েছে। নিম্নমানের বীজ দেয়ার অপরাধে গত সোমবার রাত ১১টার দিকে জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া বাজার কমিটির দফতরে নালিশি অভিযোগের দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়। পাল্টা দায়েরকৃত নালিশি অভিযোগের বাদী-বিবাদীকে নোটিশ জারি করা হবে।

অপরদিকে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত নকল ও ভেজাল বীজব্যবসায়ী হাসান বীজ ভাণ্ডারের মালিক হাসানুজ্জামান হাসান গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করেছেন। ইতোমধ্যে প্রতারণার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ফুঁসে ওঠায় কতিপয় অসাধু বীজব্যবসায়ী তাদেরকে সুকৌশলে ম্যানেজ করার খবর পাওয়া গেছে।

দাখিলি অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আন্দুলবাড়িয়া মীরপাড়ার শেখ কেরামত আলীর ছেলে প্রান্তিক চাষি শেখ শাহাবুদ্দিন। সম্প্রতি তিনি আন্দুলবাড়িয়া বাজারের তুহিন বীজ ভাণ্ডার থেকে ২ বিঘা জমিতে ধনিয়াপাতা চাষ করার জন্য ১১ কেজি ধনিয়া বীজ কেনেন। জমিতে চাষ দিয়ে ক্রয়কৃত বীজ বপন করার পর চারা গজায়নি। এ অভিযোগ তুলে তিনি বাজার কমিটির দফতরে চাষাবাদ বাবদ ৪৬ হাজার টাকা খরচসহ ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে তুহিন বীজ ভাণ্ডারের মালিক শহিদুর রহমান ইয়া বিরুদ্ধে নালিশি অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাপ্ত অভিযোগটি বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ আমলে নিয়ে প্রাথমিক শুনানি শেষে ৭ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ড গঠন করেন। বোর্ডের সদস্যগণ সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত পরিদর্শন করে সোমবার রিপোর্ট প্রদান করেন। রিপোর্ট হাতে পেয়ে বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ সোমবার রাতে বাদী-বিবাদীকে নিয়ে ফের সালিস বেঠকে বসেন। অনুষ্ঠিত সালিসসভায় সাক্ষীগণের সাক্ষ্য শুনানি শেষে রায় প্রদানের জন্য উভয় পক্ষের মনোনীত দু সদস্যসহ ৭ সদস্য বিশিষ্ট জুরিবোর্ড গঠন করেন। বোর্ডের সদস্যগণ হলেন, বাদী শেখ শাহাবুদ্দিনের মনোনীত শেখ আতিয়ার রহমান, বিবাদী শহিদুর রহমান ইয়া মনোনীত শহিদুল ইসলাম, ইউনিয়ন পরিষদ মনোনীত ইউপি সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান, বাজার কমিটির পক্ষে সহসভাপতি শেখ আসাউল ইসলাম গোলাপ ও সহসাধারণ সম্পাদক খান তারিক মহামুদ। বোর্ডের সদস্যগণের আলাপ আলোচনান্তে সর্বসম্মতিক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকার রায় প্রদান করেন।

এদিকে তুহিন বীজ ভাণ্ডারের মালিক শহিদুর রহমান ইয়া দাবি করছেন, তার নিকট বীজ না থাকায় তিনি ওই বীজ আন্দুলবাড়িয়া বাজারের কনিকা বীজ ভাণ্ডারের মালিক ওমর আলীর নিকট থেকে কিনে এনে কৃষক শেখ শাহাবুদ্দিনকে দেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শাহাবুদ্দিন বাজার কমিটির দফতরে নালিশি অভিযোগ দায়ের করায় তিনি বীজ ব্যবসায়ী ওমর আলীর বিরুদ্ধে বাজার কমিটির দফতারে পাল্টা অভিযোগ তুলে নালিশি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিদুল ইসলাম মধু বলেছেন, অভিযোগটি আমলে নেয়া হয়েছে। বাদী-বিবাদীকে নোটিশ দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার জীবননগর থানা পুলিশ আন্দুলবাড়িয়া বাজারের হাসান বীজ ভাণ্ডারের মালিক হাসানুজ্জামান হাসানের শ্বশুর আমজাদ হোসেনের বাড়িতে দু দফা অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন নামি-দামি কোম্পানির খালি প্যাকেট, প্যাকেটিং মেশিন ও বিভিন্ন প্রজাতির বীজ জব্দ করেন।

Leave a comment