চুয়াডাঙ্গায় বোনের বাড়িতে কান্নার রোল : জড়িত সন্দেহে দু বাংলাদেশি আটক
স্টাফ রিপোর্টার: মিশরের কায়রো শহরে আতিকুর রহমান (২৪) নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিককে অপহরণের পর শরীরে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে নিহতের পরিবার তার মৃত্যুর খবরটি অবগত হয়।
নিহত আতিকুর চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে। কায়রো পুলিশ খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে লাল মিয়া ও কাওসার আলী নামে দুজনকে আটক করেছে।
নিহতের বোন আম্বিয়া খাতুন জানান, গত মঙ্গলবার মিশরে কর্মরত বাংলাদেশি কয়েকজন শ্রমিকের সহযোগিতায় মিশরের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আতিকুরকে অপহরণ করে। অপহরণের পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে বাংলাদেশে বাবা-মা, বোন ও ভগ্নিপতির কাছে ফোন করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে আতিকুরকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকিও দেয় তারা। এক পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকায় রফা হয়। সন্ত্রাসীরা টাকা দিতে ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের হিসাব নং ও একটি বিকাশ নম্বর দেয়।
এদিকে পরিবারের সদস্যরা মুক্তিপণের জন্য টাকা জোগাড় করতে চেষ্টা চালানোর সময় গত রোববার রাতে আতিকুর মারা যায় এবং গতকাল সোমবার সকালে খুনের খবরটি জানতে পারেন। খুনের খবর জানার পর স্বজনদের মধ্যে আহাজারি শুরু হয়।
গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা শহরের সিনেমা হলপাড়ায় আতিকুরের একমাত্র বোন আম্বিয়ার বাড়িতে গিয়ে শোকাবহ পরিবেশ দেখা যায়। আম্বিয়ার স্বামী বাবুল আকতার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খুনিদের গ্রেফতার ও তাদের এদেশের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং লাশ ফেরত আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের নিকট দাবি জানান।
পরিবারিকসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার আজিজুল হক গত ২০ বছর আগে প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরির কারণে সপরিবারে যশোরে বসবাস শুরু করেন। সেখানে ১২ বছর আগে তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা বেগম ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি খোদেজা ইসলামকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং যশোরে বর্তমানে বসবাস করছেন। তার একমাত্র মেয়ে আম্বিয়া খাতুন স্বামী সন্তানসহ সিনেমা হলপাড়ার কাঠগোলা নামক স্থানে বসবাস করছেন। আজিজুলের একমাত্র ছেলে এসএসসি ফেল আতিকুর রহমান কাজের সন্ধানে মিশরে পাড়ি জমান। আতিক অবিবাহিত ছিলেন। চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি এলাকার হারুন নামে এক যুবক ফোন করে আতিকের মৃত্যুর বিষয়টি তার বোনের কাছে জানান। খবর পেয়ে তার আত্মীয়স্বজনেরা বোনের বাড়িতে ভিড় জমান।
এদিকে আতিকের পিতা আজিজুল হক ও বর্তমান মা খোদেজা ইসলাম ছেলের লাশের বিষয়টি দেশে আনা ও হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। প্রসঙ্গত, আতিকুর রহমান ২০১১ সালের জুলাই মাসে কাজের সন্ধানে মিশরে যায়।