বিএনপির সাথেই আলোচনায় বসতে হবে : খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথেই এ সরকারকে আলোচনায় বসতে হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এর বাইরে  কোনো নির্বাচন বাংলার মানুষ মানবে না। গতকাল শনিবার বিকেলে জামালপুর জেলা স্কুলমাঠে ২০ দলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি দেশ ও গণতন্ত্রের কথা বলে, জনগণের কথা বলে, বিএনপি জনগনের দল। মুক্তিযোদ্ধের দল। এই সর্ববৃহৎ দলের সাথে আলোচনায় বসতে হবে। তা না হলে ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এ অবৈধ সরকারকে উত্খাত করা হবে।

খালেদা জিয়া বলেন, দেশের জনগণ এখন নিরাপদ নয়। সরকার ৱ্যাবকে ব্যবহার করছে দেশের মানুষকে গুম ও হত্যার কাজে। কাজেই ৱ্যাব রাখা যাবে না, ৱ্যাবকে বাতিল করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের হত্যাকাণ্ডে মন্ত্রীর ছেলে ও মেয়ের জামাতা জড়িত। তিনি অভিযোগ করেন, ৱ্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়া বহু লোককে গুম করেছেন। তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

শেখ হাসিনার জাতিসংঘে বিশাল সফর সঙ্গী বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে বলেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ অপচয় কড়ায়-গণ্ডায় হিসেব দিতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অগণতান্ত্রিক দল, এ সরকার অবৈধ সরকার। ১৫৪টি আসনে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ লুটপাট করে খাচ্ছে। তারা ডেসটেনি, শেয়ারবাজার, হলমার্ক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংকের টাকাসহ বিদ্যুততে কুইক রেন্টাল পাউয়ারের নামে হাজার হাজার কোটি লোটপাট করেছে। এ সময় তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মহিতকে সত্য কথা বলার জন্য ধন্যবাদ জানান।

বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মিথ্যাবাদী বলে অখ্যায়িত করে উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে বলেন, জামালপুরে কি কোনো উন্নয়ন হয়েছে? কোনো উন্নয়ন হয়নি সারাদেশে কোথাও কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিদ্যুত খাতে সাড়ে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উত্পাদন বলে যাচ্ছেন তারা। তাহলে কোথাও সঠিকভাবে বিদ্যুত থাকে না কেন? আসলে বিদ্যুত উত্পাদন হচ্ছে মাত্র সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু হাসিনা মিথ্যা কথা বলে দেশবাসিকে ধোকা দিচ্ছে। সে একজন প্রচণ্ড মিথ্যাবাদী।

জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ জনসভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর  খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক  সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক সংসদ সদস্য নীলোফার  চৌধুরী মনি, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দীন টুকু, স্থানীয় বিএনপি নেতা সিরাজুল হক, সুলতান মাহমুদ বাবু, এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।

জোট নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, এলডিপির  চেয়ারম্যান কর্নেল (অ.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম, খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মাওলানা  মোহম্মদ ইসহাক, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালাহউদ্দীন মতিন, জাগপার সভাপতি সফিউল আলম প্রধান, জাতীয় পার্টিও (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার  গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির চেয়ারম্যান ডা. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের  চেয়ারম্যান গরিবে  নেওয়াজ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।