দামুড়হুদার লক্ষ্মীপুরে তুলাচাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার শীর্ষক সমাবেশ
স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃষকরা যাতে সর্বোচ্চ মূল্য পায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর উম্বাত বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত তুলাচাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার শীর্ষক এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদ উদ্দিন উপরোক্ত মন্তব্য করেন। প্রধান অতিথি আরো বলেন, বর্তমানে বেশির ভাগ জমিতেই ১০ থেকে ১২ মণ হারে তুলা উৎপাদন হয়ে থাকে। ওই জমিতে উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ মণ হারে তুলা উৎপাদন করতে হবে। কারণ বর্তমানে দেশে তুলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জিনারদের হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর ৫২ লাখ বেল তুলার প্রয়োজন হলেও দেশে মাত্র এক লাখ বেল তুলা উৎপাদন হচ্ছে।
বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ড (সিডিবি) যশোর অঞ্চলের উপপরিচালক জাফর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিডিবির পরিচালক (কর্মসূচি) ড. গাজী গোলাম মোর্তজা। বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জিনার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের ও কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা সেন দেবাশীষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিডিবি চুয়াডাঙ্গা জোনের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল কবীর। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সিডিবির চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন কটন ইউনিট অফিসার হাবিবুর রহমান।
কর্মকর্তারা বলেন, জমিতে তুলার ভালো ফলন পেতে হলে প্রতিবিঘায় ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ সার ৫০ কেজি করে, জিপসাম ২৫ কেজি, দস্তা ও বোরণ দু কেজি এবং প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। উপস্থিত কৃষক প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা চাঁদ আলী, বজলুর রহমান ও সোহেল রানা। কৃষকদের পক্ষ থেকে এ সময় ন্যায্যমূল্যে মানসম্মত বীজ সরবরাহ এবং তুলার মণ তিন হাজার টাকায় উন্নীতকরণের দাবি জানান। সমাবেশে লক্ষ্মীপুর, গোপালপুর ও বিষ্ণুপুরসহ আশপাশ এলাকার আট শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, তিনি এ বছর ২৫ কাঠা জমিতে তুলার আবাদ করেছেন। তিনি জানান, তামাক চাষ বাদ দিয়ে তুলাচাষে মনোযোগী হয়েছেন। একইভাবে গোপালপুরের মতিন ১০ কাঠা ও আব্দুর রাজ্জাক দু বিঘা তুলার আবাদ করেছেন। তারা জানান, গত মরসুমে প্রতিমণ তুলা দু হাজার ৫২০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন। এ বছর যদি তিন হাজার টাকা মণ বিক্রি করা যায়, তাহলে আগামীতে এ জনপদে তুলা প্রধান অর্থকরী ফসলে পরিণত হবে।
চলতি মরসুমে চুয়াডাঙ্গা জোনে তুলা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৫ হাজার ২০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৩০৬ হেক্টর। এর মধ্যে হাইব্রিড রয়েছে ৮৫৬ হেক্টর। যা গত মরসুমের তুলনায় তিনগুণ বেশি। গত মরসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছিলো ৩ হাজার ৭৪২ হেক্টর। যার মধ্যে হাইব্রিড জাতের ছিল ৩১২ হেক্টর ।