কেনাকাটার ভিড়ে বিড়ম্বনা হয়রানি প্রতারণা কাম্য নয়

 

ঈদুল আজহা আসন্ন। প্রায় একই সাথে সমাগত শারদীয় দুর্গোৎসব। এরই মাঝে জমতে শুরু করেছে বাজার। যদিও পবিত্র ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায় জামাকাপড়ের দোকানে অতোটা ভিড় জমে না। ভিড় হয় পশুহাটগুলোতে আর মসলার দোকানে। তবে শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে কেনাকাটার ধুম পড়ে, এবারও তার পূর্বাভাস ফুটে উঠেছে। কেনাকাটার ভিড়ের মাঝে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই প্রতারিত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে বাড়তি সতর্ক হতে হয়। বিশেষ করে জালটাকার বিষয়ে বাড়তি সতর্ক না হলেই সর্বনাশ!

 

প্রতিবছর ঈদুল আজহা সামনে রেখে পশুহাটগুলোতে কোরবানির পশু কেনা-বেচার তোড়জোড় শুরু হয়। এবারও হয়েছে, হচ্ছে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে গরু মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে বিক্রির ইতিবাচক রেওয়াজ দেশে মাংসের চাহিদা পূরণে অবদান রাখছে। অবশ্য মোটাতাজা করতে গিয়ে কেউ কেউ বুঝে না বুঝে ক্ষতিকর ইনজেকশনও পুশ করছেন। ক্ষতিকর ইনজেকশনে মোটাতাজা করা গরুর হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি যেমন বেশি, তেমনই ওই গরুর মাংসও মানবদেহের জন্য মারাত্মাক ক্ষতিকর। গরু পালনকারীদের এ বিষয়ে আগেভাগে সতর্ক করার চেয়ে এবার যখন পশুহাটগুলো জমতে শুরু করেছে তখন সরকার পশুহাটগুলোতে মেডিকেল টিম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছে, ক্ষতিকর ইনজেকশন দিয়ে মোটাতাজা করা গরুসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এমন গরু শনাক্ত করবে এ টিম। কোরবানির পশুহাটগুলোতে যখন পশু বিক্রির জন্য চলছে জোর প্রস্তুতি, তখন এ ধরনের পদক্ষেপের ঘোষণা- মোটাতাজা করে হাটে তোলা বিক্রেতাদের বিড়ম্বনা বাড়াবে না তো? এমনিতেই পশু নিয়ে বড় শহরের উদ্দেশে রওনা হয়ে পথের ঘাটে ঘাটে গুনতে হয় চাঁদার টাকা। এরপর যদি হাটেও হয়রানির সুযোগ পায় কোনো টিম তা হবে পশুপালনে নিরুৎসাহেরই শামিল। সে কারণেই ঘরে ঘরে গরু মোটাতাজা করা খামারি ও কৃষকদের আগেভাগেই সচেতন করার মতো পদক্ষেপই হতো সঠিক পদক্ষেপ। যেহেতু মানবদেহের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে এমন পশু শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেহেতু কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সেদিকেও বাড়তি নজর রাখা উচিত। আর জালটাকা? শুধু পশুহাটগুলোতে নয়, হাটের বাইরেও প্রতারকচক্র সক্রিয়।

 

দীর্ঘদিন ধরেই দেশে অসংখ্য চক্র রয়েছে। যারা নানাভাবেই টাকার জালনোট বাজারে ছড়িয়ে আসছে। মূদ্রণ প্রযুক্তি যতোটা সহজতর হয়েছে, টাকার জালনোট শনাক্তের অতোটা সহজ উপায় বাতলে দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। সে কারণেই পশুহাটগুলোসহ বিপণিবিতানগুলোতে জালটাকা শনাক্তকরণ যন্ত্র রাখা হয়েছে। এরপরও টাকার জালনোট গোছিয়ে দিয়ে গরু, মোষ ও ছাগল বা অন্য মালামাল নিয়ে সটকানোর সুযোগের অপেক্ষায় প্রতারকচক্র। ফলে সকলকেই বাড়তি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো দরকার।