ঝিনাইদহের সাংস্কৃতিক সংগঠক সাকিব সন্ত্রাসী হামলায় আহত

হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের বিবৃতি কর্মসূচি ঘোষণা

 

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের সাংস্কৃতিক সংগঠক সরকারি কেসি কলেজের মেধাবী ছাত্র সাকিব আল হাসান চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে কলেজ থেকে ফেরার পথে শহরের ক্রিসেন্ট মোড় থেকে তার ওপর হামলা করা হয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় সাকিবকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে হাত, পা ও বুকে যখমসহ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। খবর পেয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাকিবকে দেখতে হাসপাতালে যান।

এদিকে এসআই উজ্জলের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সাকিবের অবস্থার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যায় এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীর গ্রেফতারের আশ্বাস দেয়। মেধাবী ছাত্র সাকিব ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে।

প্রতক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শনিবার দুপুরের দিকে কলেজ থেকে ফেরার পথে শহরের ক্রিসেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার এলাকা থেকে শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী হত্যামামলার আসামি রবি ওরফে শাহ রবি অস্ত্রশস্ত্রসহ সাকিবের ওপর হামলা ও হত্যার চেষ্টা চালায়। লোকজন ছুটে এলে গুরুতর যখম করে রবির নেতৃত্বে বীরদর্পে ফিরে যায় একদল দুর্বৃত্ত-সন্ত্রাসী। কেসি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সাকিবের সংগঠনের ওপর দেয়ায় কলেজের ছাত্র নামধারী ও বহিরাগত দুর্বৃত্তরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ হামলা চালায় বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে। আহত ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠক সাকিব জানায়, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে খবরদারি করতে না পেরে প্রায়শ্বই বাধা দিয়ে আসছে রবি ও তার অনুসারীরা। এসব কারণে গত জুলাই মাসে রবির নামে জিডি দায়ের করা হয়। রবি ঝিনাইদহের ছোট কামারকুণ্ডু গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। সে হামদহ এলাকার সান্টু হত্যামামলার আসামি। তার নামে থানায় বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী নিয়ে সাম্প্রতি শুরু হওয়া পৌর মডেল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সাকিব তার সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে সহযোগিতা করে আসছে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও আয়োজনকারীদের। এ নিয়েও হুমকি দিয়ে আসছিলো রবি ও তার সহযোগীরা। এসবের জের ধরে হামলা ও হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় সাকিব।

জানা গেছে, ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজে দীর্ঘদিন সুনামের সাথে সাংস্কৃতিক সংগঠন কথন সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংসদ কসাস পরিচালনা করে আসছে সাকিব ও বেশ কিছু সাংস্কৃতিক কর্মী। এতে কলেজে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষদের মাঝে। কিছুদিন আগে সাকিব ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সদস্য সচিব নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছে।

এদিকে সাকিবের উপর হামলা ও হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতারে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষে সভাপতি একরামুল হক লিকু, জেলা নাট্যসমন্বয় পরিষদের পক্ষে নাজিম উদ্দিন জুলিয়াস, ফ্লিম সোসাইটি ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি শাহিনুর আলম লিটন, নিরাপদ সড়ক চাই ঝিনাইদহ জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রহমান মিল্টনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিবৃতি দিয়েছেন। তারা সাকিবের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবি জানিয়েছেন। না হলে আলটিমেটাম ঘোষণা ও মানববন্ধন করবেন তারা।

মেধাবী ছাত্র ও সংগঠক সাকিবের ওপর হামলার ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে দেখছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি পুলিশ প্রশাসনকে হামলাকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন আজাদ জানান, ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে সাকিবের অবস্থার খোঁজ নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়া হবে একই সাথে হামলাকারীর পূর্বের বিভিন্ন অপরাধ তৎপরতার খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।