শঙ্কার মাঝে আজ সাঈদীর রায়

কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত : দেশজুড়ে সতর্কতা

 

স্টাফ রিপোর্টার: যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় ঘোষণা হবে আজ। আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আপিলটি এক নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে। সাঈদীর রায় দেখে হরতাল-অবরোধ ও বিক্ষোভের মতো কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সাঈদী মুক্তি পরিষদের ব্যানারে প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত-শিবিরের আত্মঘাতী স্কোয়াড। সাঈদীর প্রতি কোনো অবিচার হলে জনগণ তা মেনে নেবে না বলে হুঙ্কার ছেড়েছে ছাত্রশিবির। তাদের বহু নেতাকর্মী বলছে, প্রয়োজনে তারা সাঈদীর জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত। এদিকে ঝিনাইদহে শিবিরের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশজুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি শতর্কতামূলক ব্যবস্তা।

সাঈদীর রায়কে ঘিরে হরতাল-অবরোধ, ভাঙচুর ও সুইসাইড স্কোয়াডের তৎপরতাসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল ও তল্লাশি। বগুড়া, জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় বিজিবি টহলে নেমেছে। প্রতিটি জেলায় আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক জরুরি বৈঠক ডেকে প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। হাইকোর্ট ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় ৩ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। এ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে র‌্যাব, সোয়াত টিম, পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, দাঙ্গা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ফায়ার সার্ভিস। উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে জলকামান, এপিসি, পিপার স্প্র্রে, রায়টকার, টিয়ার গ্যাসসহ সব ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করার প্রস্তুতিও নিয়েছে পুলিশ। ঢাকাসহ সারাদেশের সংবেদনশীল স্থানগুলোতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। টহলে রয়েছে র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। বাড়ানো হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সারাদেশের কারাগারের নিরাপত্তা। বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা থেকে বিজিবি নামানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিজিবির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ আহমদ রাত সোয়া ৯টায় বলেন, নাশকতামূলক যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে বিজিবি সদস্য চাওয়া হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী সেখানে বিজিবি সদস্য পাঠানো হয়েছে। আইনশৃংখলার অবনতি হতে থাকলে তারা সেখানে কাজ করবে। আর তা না হলে তারা স্ট্যান্ডবাই থাকবে।

আদালতসূত্রে জানা গেছে, পাঁচ মাস ধরে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকার পর সাঈদীর রায় কার্যতালিকায় এসেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ ও সরকারপক্ষের করা দুটি পৃথক আপিলের চূড়ান্ত এ রায় আজ ঘোষণা করবেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হচ্ছেন- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

আপিলের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) সুযোগ পাবেন কি-না সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ ব্যাপারে বলেন, কাদের মোল্লার আবেদন খারিজের রায় না দেখে বলা যাবে না, সাঈদী রিভিউয়ের সুযোগ পাবেন কি-না। মেরিটের ওপর ভিত্তি করে ওই আবেদন খারিজ হয়ে থাকলে সাঈদী রিভিউয়ের সুযোগ পাবেন। মেইন্টেবিলিটির ওপর হয়ে থাকলে সুযোগ পাবেন না।

গত বছরের ২৮ মার্চ দণ্ড থেকে অব্যাহতি চেয়ে আপিল করেন সাঈদী। অপরদিকে দণ্ড বহাল এবং ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রমাণিত হওয়ার পরেও খালাস পাওয়া ৬টি অভিযোগে দণ্ড ঘোষণার দাবি জানিয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ দুটি আপিলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ১৬ এপ্রিল বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন আপিল বিভাগ। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় হবে যুদ্ধাপরাধ বিচারের দ্বিতীয় চূড়ান্ত রায়। এর আগে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তি করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখেন। পরে রায় অনুযায়ী গত ১২ ডিসেম্বর রাতে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।

এদিকে আপিলের রায় ঘোষণার খবরে সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। তারা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে। একই সাথে তারা বুধবার সকাল ৮টা থেকে প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।

মাওলানা সাঈদীর রায় প্রসঙ্গে তার ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, আদালতের কাছে আমরা ন্যায়বিচার আশা করছি। যদিও এ সরকারের কাছে ন্যায়বিচার আশা করা অরণ্যে রোদন- তারপরও আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। আমার বাবা নির্দোষ। তাই জুলুম থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করছি।

জামায়াতের প্রস্তুতি: সাঈদীর রায়কে ঘিরে বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত-শিবির। আজ বুধবার আপিল বিভাগে রায় ঘোষণা হবে এমন খবর প্রচারের পর সন্ধ্যায় রাজধানীতে গোপন বৈঠকে বসেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরীর বেশ কয়েকজন নেতা। ওই সময় তাদের কেউই মোবাইলফোন সা রাখেননি এবং কোথায় বৈঠকে হয়েছে সেটাও প্রকাশ করেননি।
জানা গেছে জামায়াত, সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে মিথ্যা, বায়ুবীয় ও কাল্পনিক মনে করছেন তারা। রায় তাদের প্রত্যাশার বিপক্ষে গেলে হরতালসহ যেকোনো কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা। জামায়াতের নেতারা আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সাঈদী মুক্তিপরিষদ গঠন করেছেন। জামায়াতের বাইরেও ধর্মপ্রাণ মানুষকে এসব কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এসব কমিটি সাঈদীর জন্য মরতেও পারে বা আত্মঘাতী স্কোয়াডও রয়েছে। তাদেরকে একত্র করে সড়ক, অবরোধ, হরতাল, ভাঙচুরসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত।

ছাত্র-শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জাব্বার মঙ্গলবার দলীয় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সাঈদীর মতো ইসলামী চিন্তাবিদের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবে না। অপর একটি সূত্র জানায়, শিবিরের বহু কর্মী সাঈদীর জন্য শহীদ (আত্মঘাতী) হতেও প্রস্তুত। তারা যেকোনো মুহূর্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ করতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে সাঈদীর মুক্তির জন্য দোয়া আহ্বান করেন। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। মিথ্যা, বায়ুবীয় ও কাল্পনিক অভিযোগে সরকার তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে মিথ্যা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে তাকে সাজা দেয়া হয়। তিনি যেন সরকারের কোনো জুলুমের শিকার না হন সেই জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করার আহ্বান জানান।

ছাত্র-শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জাব্বার লক্ষ্মীপুরে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমরা ইসলামী আন্দোলনের জন্য শহীদ হতেও প্রস্তুত। সরকারের জানা উচিত শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার শাহাদাৎ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে হাজারও আবদুল কাদের মোল্লার জন্ম দিয়েছেন।

এছাড়া জামায়াত-শিবির সারাদেশে সাঈদী মুক্তিপরিষদ নামে সংগঠন করে আত্মঘাতী স্কোয়াড গঠন করেছে। তারা প্রয়োজনে সাঈদীর জন্য শহীদ হতেও প্রস্তুত। ইতঃপূর্বে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা সাঈদীর জন্য শহীদ হতে চাই, সাঈদীর মুক্তি চাই ইত্যাদি লিখে বিক্ষোভ করে ছাত্র-শিবির কর্মীরা। সাইফুল ইসলাম নামে তাদের একজন যুগান্তরকে বলেন, রায়ে খারাপ কিছু হলে তারা জীবন দিতেও প্রস্তুত রয়েছেন। ফলে সাঈদীর রায়কে ঘিরে বড় ধরনের নাশকতার আশংকা রয়েছে।

পুলিশের প্রস্তুতি: সাঈদীর রায় ঘোষণা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় জেলা প্রশাসক, এসপি, থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা সভা করে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, রায়কে ঘিরে আত্মঘাতী স্কোয়াডসহ যেকোনো অপতৎপরতা ও নাশকতা রোধে পুলিশ সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সংবেদনশীল স্থানগুলোতে বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে। রায়কে কেন্দ্র করে কোনো মহল যাতে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, সাঈদীর রায় ঘোষণা উপলক্ষে সুপ্রিমকোর্ট অঙ্গনের চতুর্দিক শ শ ৱ্যাব, সোয়াত, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও দাঙ্গা পুলিশ সদস্যরা ঘিরে রাখবেন। উচ্চ আদালত এলাকায় মোতায়েন করা থাকবে বোমা ডিসপোজাল ইউনিট। সুপ্রিমকোর্টের প্রধান ফটকে নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে র‌্যাব, সোয়াত, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। শিক্ষা ভবন, প্রেস ক্লাব, মৎস্য ভবন, শাহবাগ, কদম ফোয়ারা, পুরনো হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বরসহ গোটা এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আনা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার প্রবেশপথসহ মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানো, সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঢাকার ৪৯ থানা, ৱ্যাবের সংশ্লিষ্ট ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশের সবগুলো ইউনিটকে সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশের কন্ট্রোলরুম থেকে রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে।

পুলিশ সদর দফতরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি দেয়া ওই রায়ের পর সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে গুজব ছড়িয়ে সারাদেশে ব্যাপক দাঙ্গা হয় এবং প্রাণ হারায় বহু মানুষ। বিষয়টি সামনে রেখে কাজ করছে পুলিশ। এ কারণে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, কুমিল্লাসহ জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় অধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, সাঈদীর রায় উপলক্ষে নাশকতামূলক যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি প্রস্তুত আছে।

কারাগারের নিরাপত্তা জোরদার: সাঈদীর রায় উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কামিশপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের সবগুলো কারাগারের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে কারাসূত্র জানিয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের রায়: মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরে হত্যা, লুণ্ঠনসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার করা হয় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে। পরের বছর ১৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। একাত্তরে তিন হাজারের বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা করা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর ও ধর্মান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ২০টি ঘটনায় ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে তার বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যেই আপিল করেন সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষ। আপিলে সাঈদী অভিযোগ থেকে খালাস চান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ তার আপিলে ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হলেও সাজা না হওয়া ছয় অভিযোগে এই জামায়াত নেতার শাস্তি দাবি করেন। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর সাঈদীর মামলায় প্রথম আপিল শুনানি শুরু হয়। ৪৯ কার্যদিবস শুনানির পর আপিল দুটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।