মরসুমি বায়ু বিদায় নেবে অক্টোবরে : শীতের আগমন নভেম্বরেই

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: উত্তর ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে বর্ষা পরবর্তী সময়েও আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ অব্যাহত থাকতে পারে। ইতোমধ্যে এল নিনোর প্রভাবে স্বাভাবিক বর্ষা ছিলো না। বৃষ্টিপাতের বিচ্যুতি হয়েছে উল্লেখযোগ্য। একইভাবে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত প্রাক-শীতে অর্থাৎ বর্ষা পরবর্তী সময়ে বঙ্গোপসাগরের দুর্যোগ মরসুমেও আচরণ হতে পারে ব্যতিক্রমী। অক্টোবর ও নভেম্বরে সাগরে সর্বোচ্চ দুটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। অক্টোবর মাসের প্রথমে দক্ষিণ-পশ্চিম মরসুমি বায়ু প্রবাহ (বর্ষা) বিদায়ের পরই সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মরসুম। এ বছর বঙ্গোপসাগরে খুব বেশি প্রলয়ঙ্করী ঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। নভেম্বর থেকেই শুরু হয়ে যেতে পারে শীতের আবহ। আন্তর্জাতিক আবহাওয়া গবেষণা দফতর ও ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রগুলো বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ পূর্বাভাস প্রদান করেছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় এল নিনোর প্রভাবে আগেই আন্তর্জাতিক গবেষণা দফতরগুলো উত্তর ভারত মহাসাগর উপকূল এবং বঙ্গোপসাগর উপকূলে বর্ষায় কম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। বাস্তবেও ঘটেছে তাই। এ অনুযায়ী বাংলাদেশে গত আগস্ট মাস পর্যন্ত বর্ষা মরসুমে বৃষ্টিপাতের বিচ্যুতি ছিলো সবচেয়ে বেশি। জুলাইয়ে সারাদেশে ২৮ ভাগ বৃষ্টিপাত হ্রাস পেয়েছিলো। কিন্তু আগস্টে এসে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ওই মাসে ৫ ভাগ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। জুন মাসেও বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বেশি। সব মিলিয়ে এ বর্ষা মরসুমে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সাগরে বেশ কয়েকটি মরসুমি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্টি হয়নি মরসুমি নিম্নচাপ। সাধারণত মরসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর থেকে মেঘ এসে উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি হয়। এ বৃষ্টিপাত নিয়ন্ত্রণ করে ভাটি অঞ্চলের লবণাক্ততা। সাগরের উপরিভাগেও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃষ্টিপাত ভূমিকা রাখে। কিন্তু নিম্নচাপ সৃষ্টি না হওয়ায় বাংলাদেশ উপকূলে ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি। লঘুচাপের বিস্তৃতিতে ভারতীয় উপকূলেই বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বাংলাদেশে বৃষ্টিপাতের বিচ্যুতি ছিলো তুলনামূলক বেশি। গতমাসের তিনটি লঘুচাপই ভারতীয় উপকূল অতিক্রম করায় বাংলাদেশে বৃষ্টির প্রভাব কম ছিলো। এতে চট্টগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চলে পাহাড়ী ঢল জনিত আকস্মিক বন্যা ছিলো না। কৃষি কাজের জন্য এ অঞ্চলে অনুকূল আবহাওয়া থাকলেও দেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য কিছুটা প্রভাব পড়ে। গত মাসে খুলনা অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের বিচ্যুতি ছিলো ১৮ ভাগ। কম বৃষ্টিপাতের কারণে এ অঞ্চলে লবণাক্ততার প্রভাব পড়তে পারে। যা কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে গবেষণা সংস্থাগুলো জানিয়েছে।