শিশুসহ মা-বাবাকে মারধরের ঘটনায় পুলিশ ঘেরাও

 

স্টাফ রিপোর্টার: যশোর সদরের চাঁচড়া সাড়াপোল বকুলতলা এলাকায় ১৩ বছরের এক শিশু ও তার মা-বাবাকে বেদম মারপিট করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করায় শ’ শ’ নারী-পুরুষ-শিশু গতকাল মঙ্গলবার শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। একইসাথে তাদের নামে দায়ের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অভিযুক্তদের আটক ও শাস্তির দাবি করা হয়েছে।

পুজা উদযাপন পরিষদের সদর উপজেলা শাখার সভাপতি দুলাল সমাদ্দার জানান, উত্তর সাড়াপোল বকুলনগর এলাকার বেদকণ্ঠ রায়ের ছেলে মিহির রায় সাড়াপোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। উত্তর সাড়াপোল এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাসেলও একই স্কুলে লেখাপড়া করে। গত ৭ সেপ্টেম্বর ক্লাসে তারা মারামারি করে। স্কুল ছুটির পর রাসেল বাড়িতে গিয়ে জানালে রাসেলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক, চাচা আব্দুল কুদ্দুস এবং একই এলাকার আব্দুল বারিক বেলা ১১টার দিকে লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়িতে ঢোকে এবং বেদকণ্ঠ রায়কে মাঠ থেকে ডেকে এনে বেদম মারপিট করে। একইসাথে শিশিরের মা সুমা রাণীকেও মারপিট করা হয়। এ সময় শিশির ঘরের মধ্যে ছিলো। সে বাইরে এলে তাকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে বেদম পেটানো হয়। পরে একটি ভ্যানে আহত তিনজনকে হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ শিশিরকে আটক করে। শিশির খড়িঞ্চাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

এই ঘটনায় বেদকণ্ঠ রায় ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে একটি মামলা করেন। কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক পাল্টা একটি অভিযোগ দিলে কোতোয়ালী থানা পুলিশ মামলা হিসাবে রেকর্ড করে। আব্দুর রাজ্জাকের দেয়া অভিযোগ রেকর্ড করায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ-শিশুরা। মঙ্গলবার তারা মিছিলসহকারে কোতোয়ালী থানা ঘেরাও করে। তারা অবিলম্বে বাবা-মা-ও শিশু শিশিরের নির্যাতনকারী আসামিদের আটক এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন। বিক্ষোভকারীরা শিশু শিশিরকে মুক্ত করারও দাবি করেন।

এ সময় থানার ওসি ইনামুল হক তাদের শান্ত হওয়ার কথা বলেন এবং আসামিদের আটকের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন এবং পরে প্রেসক্লাব যশোরে এসে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ দেন।

এ বিষয়ে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং মেম্বার মঞ্জুর-এ-মাহবুব সাংবাদিকদের জানান, উভয়পক্ষই থানায় মামলা করেছে। কী কারণে গণ্ডগোল তা জানা নেই; তাছাড়া কেউই এ ব্যাপারে সালিস বিচারের কথা বলেনি তাকে। সে কারণে তিনিও তেমন আগ্রহ দেখাননি।

কোতোয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার জহুরুল হক বলেন, দু শিশুর মারামারির ঘটনায় রাজ্জাক ও তার ভাই কুদ্দুস বেদকণ্ঠের বাড়ি যান বিষয়টি জানতে। এ সময় শিশির ঘর থেকে দা এনে কুদ্দুস ও রাজ্জাকের ওপর চড়াও হন। এ সময় কুদ্দুস জখম হন। পরে গ্রামবাসী শিশিরকে মারধর করে পুলিশে দেয়। তিনি বলেন, দু পক্ষের মামলা হয়েছে এবং উভয়পক্ষের দুজন আটক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।