ইবি প্রক্টরকে অব্যাহতি

 

ইবি প্রতিনিধি: অবশেষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে এক বৈঠক শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার নিজ ক্ষমতাবলে ড. মাহবুবর রহমানকে প্রক্টরের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ত.ম লোকমান হাকিম নতুন প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকারের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে তিনি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন এবং নতুন প্রক্টর অধ্যপক ড. ত.ম লোকমান হাকিমের নাম ঘোষণা করেন। অধ্যাপক ড. ত ম লোকমান হাকিম এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট, সহকারী প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ড. লোকমান শাপলা ফোরামের কার্যনির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য। তিনি আগামী এক বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বৈঠকে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, রেজিস্ট্রার ড.মসলেম উদ্দিনসহ শিক্ষক সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরামের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক ড. ত.ম লোকমান হাকিম বলেন, গতকাল বিকেলে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে উপাচার্য ফোন করে আমাকে জানিয়েছেন। আমাকে এ দায়িত্ব দেয়ার জন্য উপাচার্য মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশী।

অব্যাহতির কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ড. মাহবুবর রহমানকে ভুলক্রটি বা স্পষ্ট কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে অব্যাহতি দেয়া হয়নি। সম্প্রতি একটি মহলের কাছে তিনি অপছন্দনীয় হওয়ায় এবং এ ইস্যুতে ক্যাম্পাস স্বাভাবিক না হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে তাকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে উপাচার্য মহোদয় আমার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমি তাকে স্বাগত জানাই।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট ছাত্রলীগের সাথে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৫ দিনের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে। সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হলে তারা ঘটনার জন্য প্রক্টরকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করে। প্রক্টর ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার, শিক্ষক সমিতি, শিক্ষক সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শাপলা ফোরামসহ ছাত্রলীগের একাংশ ঘটনার জন্য প্রক্টরকে সরাসরি পদত্যাগে বাধ্য না করে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মত দিয়েছিলেন। অপরদিকে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান ও ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপ প্রক্টরকে ঘটনার জন্য দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করেন। ফলে প্রক্টর ইস্যূতে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ক্যাম্পাস খোলা নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়।