বনানীতে নিজের ঘরে দম্পতির গুলিবিদ্ধ লাশ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসের একটি বাড়ি থেকে এক দম্পতির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রী রোখসানা পারভীনকে হত্যার পরআব্দুর রব নামে ওই ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। নিহত দম্পতির ছেলেও বলেছেন, ব্যবসায়মন্দার কারণে তার বাবা ও মায়ের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।পঞ্চাশোর্ধ্ব এই দম্পতির তিন ছেলে ওএক মেয়ে রয়েছে। নয় বছরের ছোট মেয়েকে নিয়ে ওল্ড ডিওএইচএসের ৫ নম্বর রোডের ৬০/এনম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তারা।

আশপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় পাঁচতলা ওই ভবনের চতুর্থ তলায় হঠাৎ গুলির শব্দ পান তারা। পরে ওই দম্পতির মেয়ের চিৎকারে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দুজনকে মৃত দেখে থানায় খবর দেন।খবর পেয়ে পুলিশের সাথে র‌্যাব কর্মকর্তারাও সেখানে যান। সিআইডির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দলও সেখানে যায়।পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রেখেছিলো এবং কাউকে ঢুকতে দিচ্ছিলো না।ওই ভবনের অন্য একটি ফ্ল্যাটে স্বজনেরকাছে আসা জাহিদ হাসান বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শুনলাম, সন্ধ্যা বেলা তাদের ছোটমেয়েটি (৯ বছর) বাইরে খেলা শেষে বাসায় ফিরে দেখে তার বাবা-মা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েআছে।ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনারকুদরাত-ই খুদা জানান, তারা ঘরে ঢুকে দুটি লাশগুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

খবর পেয়ে বাবার বাসায় আসেন নিহত রব-রোখসানার ছেলে নাফিস আহমেদ। তারা তিন ভাই গুলশানে দাদার বাড়িতে থাকেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।নাফিস সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছোট বোন বাইরে থেকে বাসায় ঢুকে বাবা-মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। তার চিৎকারেই আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে।ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, নারীর লাশটি বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে ছিলো, পাশেই মেঝেতে তার স্বামীর লাশ। তার পাশে পড়ে ছিলো একটি আগ্নেয়াস্ত্র।ওই ব্যক্তির মাথায় একটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। একটি অস্ত্রও রয়েছে। সব দেখে মনে হয়েছে, স্ত্রীকে হত্যার পর তিনি নিজের মাথায় গুলি চালান।পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, রবের মাথার ডান পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে,যেখান থেকে রক্ত ঝরছিলো। অস্ত্রটি পড়েছিলো তার ডান পায়ের কাছেই আর বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকা রোখসানার চশমাটি কপালে ওঠানো ছিলো।ঘটনাস্থল থেকে গুলির দুটি খোসা উদ্ধারকরা হয়েছে বলে জানান মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার লুৎফুল কবীর। অস্ত্রটিওলাইসেন্স করা বলে জানান তিনি।নাফিস বলেন, ব্যবসায় ধসের কারণে তারবাবা হতাশায় ভুগছিলেন। তাছাড়া ঋণের কারণে নানা দিক থেকে চাপও আসছিলো।এসব নিয়ে ফ্যামিলিতেঅশান্তি লেগে ছিলো। মনে হচ্ছে, এ থেকেই মা-কে হত্যার পর বাবা আত্মহত্যা করে।রবের শিপিং ব্যবসা ছিলো বলে নাফিস জানান।তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নাফিসের কাছে ব্যবসার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানার অবকাশ এইসময় ছিলো না।পুলিশ বলছে, ব্যবসা নিয়ে সঙ্কটে থাকারকথা রবের বন্ধুদের কাছেও জেনেছেন তারা। ধারণা করা হলেও ময়না তদন্তের পরই এইদম্পতির নিহত হওয়ার কারণ সম্পষ্ট হওয়া যাবে, বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তা লুৎফুল কবির।