দর্শনা রেলবন্দরের পাঁচিল নির্মাণকাজে দুর্নীতির অভিযোগ :এমপি টগরের পদক্ষেপ
দর্শনা অফিস: দর্শনা রেলইয়ার্ডের ঐহিত্য বিলীন করেছে এক শ্রেণির সুবিধাবাদী ও লুটেরাচক্র। এদেরকে নির্মূল করতে পারেনি ইয়ার্ডে দায়িত্বরত নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যরা। লুটেরাদের কাছে নিরাপত্তাদের হার মানতে হয়েছে বারবার। কখনো হার মানতে হয়েছে টাকার কাছে আবার কখনো কখনো অস্ত্রের ঝনঝনানি শব্দে। এতে নিরাপত্তা বিভাগের বাবুদের পকেট মোটা হলেও অর্থের ভান্ডার খালি হয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর। এ রুটে ভারত থেকে মালামাল আমদানি করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন আমদানিকারক হয়েছে দেউলিয়া। অনেকেই আমদানিতে আগ্রহ হারিয়েছে। লুটপাট ঠেকাতে সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বারবার পদক্ষেপ নিলেও হয়নি কোনো সুফল। স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা গেছে ভেস্তে। দর্শনা রেলইয়ার্ডে থামেনি লুটপাট, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বন্ধ হয়নি গুলির শব্দ। অরক্ষিত ইয়ার্ডটি বাউন্ডারিপাঁচিল ঢেকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি বহুবার হয়েছে উপেক্ষিত। তবুও আশায় বুক বেধেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টগুলো।
দর্শনা রেল ইয়ার্ডে লুটপাট বন্ধে দেরিতে হলেও নেকনজর দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। লুটপাট বন্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি আলী আজগার টগর ইয়ার্ডে বাউন্ডারী পাঁচিল নির্মাণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে করেছেন একাধিক বৈঠক। সীমানা পাঁচিল নির্মাণের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। ফলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সীমানা পাঁচিল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। দর্শনা রেল ইয়ার্ডে ৩ হাজার ৯২২ ফুট দৈর্ঘ সীমানা পাঁচিল নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। প্রায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সাড়ে ৮ ফুট উঁচু পাঁচিলের ওপর সাড়ে ৩ ফুট তারকাটা বিশিষ্ট পাঁচিল নির্মাণ কাজের ইজারা পায় পাকশীর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আব্দুর রহমান। অভিযোগ উঠেছে, অনেকটা রাতের আঁধারেই গোপনে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে শুরু করা হয় নির্মাণ কাজ। ফলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উঠে পুকুর চুরির অভিযোগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ তোয়াক্কা না করে নিজেদের খেয়ালখুশি মতোই পুরোদমে চলছিলো নির্মাণ কাজ। কাজ দেখভাল করণের জন্য দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাকে এখনো পর্যন্ত দেখা যায়নি। গত শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে আকস্মিকভাবে নির্মাণ কাজের পরিদর্শন করেন রেল মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি হাজি আলী আজগার টগর। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজের ত্রুটির অভিযোগ ও সত্যতা পান। সাথে সাথে তলব করা হয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তাদের। এমপি টগরের তলবে সন্ধ্যায় দর্শনায় আসেন পাকশী ডিইএন ওয়ান মাসুদ আল ফাত্তাহ, চুয়াডাঙ্গা এ-ই এন জাবির উদ্দিনসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। এমপি টগরের সাথে রেলওয়ে বিভাগের ওই কর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত হয় বৈঠক। বৈঠকের পর নির্মাণ কাজ স্থগিত রেখে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এ কমিটিতে কাকে কাকে রাখা হয়েছে তা জানা না গেলেও নির্মাণ কাজ রয়েছে বন্ধ। পাঁচিল নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মোকাবেলা করায় এমপি টগরকে সাধুবাদ জানিয়েছে দর্শনাবাসী।