স্বামীর সংসারে জোর করে নেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষপান? বাল্যবিয়ের বলি রোজিনা

 

ঝিনাইদহ গান্নার ৭ম শ্রেণির ছাত্রীর চুয়াডাঙ্গার ভাণ্ডারদহে বিয়ের ৬ মাসের মাথায় ঝরলো প্রাণ

 

স্টাফ রিপোর্টার: বাল্যবিয়ের বলি হয়েছে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী রোজিনা। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। রোজিনা চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের পাঁচমাইল ভাণ্ডারদহের মিজানুর রহমানের স্ত্রী। গতকালই রোজিনাকে তার পিতার বাড়ি ঝিনাইদহের গান্না থেকে ভাণ্ডারদহে নেয়া হয়। সন্ধ্যায় স্বামীগৃহে বিষপান করে বলে স্বামী পক্ষের লোকজনের দাবি। অবশ্য রোজিনার মৃত্যুর পর পরই তারা হাসপাতাল ছেড়ে আত্মগোপন করে। এতেই মৃত্যুর আড়ালে আরো কিছু আছে বলে সন্দেহ দানা বাধে। লাশ হাসপাতালের লাশ রাখা ঘরে রাখা হয়েছে। আজ ময়নাতদন্ত করা হতে পারে।

জানা গেছে, গান্নার আয়ুব আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুন এ বছর ৭ম শ্রেণিতে ওঠে। ৬ মাস আগে নানা আব্দুল মোমিনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের পাঁচমাইল ভাণ্ডারদহে বেড়াতে এসে নানাবাড়ি গ্রামের ইলাহী বকশের ছেলে মিজানুর রহমানের দৃষ্টিতে পড়ে। পছন্দ হয়। বিয়ের প্রস্তাব দেয়। নানা এ বিয়ের প্রস্তাবে মেতে ওঠেন। নানা বাড়িতেই রোজিনাকে বিয়ের আসনে বসানো হয়। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে করতে রোজিনা অস্বীকৃতি জানালেও তাকে খানেকটা জোর করেই বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর স্বামীর সংসার করতে অপারগতা প্রকাশ করে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী রোজিনা। অভিযোগ ওঠে, রোজিনা তার স্বামীকে পছন্দ করছে না। এসব নিয়ে মনোমালিন্যও দেখা দেয়। গত ঈদে রোজিনা তার পিতার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার পর স্বামীগৃহে ফিরতে অস্বীকৃতি জানায়। গতকাল বুধবার স্বামী মিজানুর রহমানের বড় ভাই সবুর আলী গান্না থেকে রোজিনাকে নিয়ে ভাণ্ডারদহে আসেন। সন্ধ্যার দিকে স্বামী গৃহে নেয়া হয় তাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রোজিনাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে নেয়ার ঘণ্টাখানেকের মাথায় মারা যায় রোজিনা। মৃত্যুর পরপরই লাশ ফেলে সটকে পড়ে স্বামীসহ স্বামীর লোকজন। সন্দেহ দানা বাঁধে। লাশ পরে হাসপাতালের লাশ রাখা ঘরে রেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়। অপরদিকে রোজিনার পিতা পক্ষ গতরাতেই মৃত্যুর খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।